চিন বার বার নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা নষ্ট করার চেষ্টা করেছে । অতিমারির মাঝেও। চিনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগই তুললেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। চেন্নাইয়ে তুঘলকের ৫৩তম বাৎসরিক অনুষ্ঠানে চিনকে কড়া আক্রমণ করে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারতও যোগ্য জবাব দিয়েছে।
পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে যা দরকার, ভবিষ্যতে তার সবই করবে ভারত।
শনিবার বিদেশমন্ত্রী চেন্নাইয়ের ওই অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘উত্তর সীমান্তে বিশাল বাহিনী এনে, আমাদের চুক্তি ভঙ্গ করে স্থিতাবস্থা নষ্ট করার চেষ্টা করছে চিন। মনে করুন, কোভিড অতিমারির সময় ২০২০ সালের মে মাসেও এ রকমই হয়েছে। আমরাও যোগ্য এবং কঠিন জবাব দিয়েছিলাম।’’
তিনি এও মনে করিয়ে দিলেন, ভয়ঙ্কর আবহাওয়ার মধ্যেও সীমান্ত রক্ষা করে গিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। তাঁর কথায়, ‘‘কঠিন ভূখণ্ডে দাঁড়িয়ে চরম আবহাওয়ার মধ্যেও আমাদের বাহিনী সীমান্ত রক্ষা করেছে।’’
অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর জানান, কেন সারা দুনিয়ার কাছে এতটা গুরুত্বপূর্ণ ভারত। তিনি বলেন, চিনকে ভারত যে জবাব দিয়েছে, তা-ও দেখে গোটা দুনিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত এমন এক দেশ, যে কোনও দেশকে আঘাত করে না। তবে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য যা দরকার, সবটাই করে।’
ভারতের ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্বও বুঝিয়ে দিয়েছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের ক্ষেত্রে ইতিহাসের পাশাপাশি ভৌগোলিক অবস্থানও এই দেশের গুরুত্ব বাড়িয়েছে। ভারতের নামে যে মহাসাগর, তার কেন্দ্রে রয়েছে ভারতীয় উপদ্বীপ। আমাদের অংশগ্রহণ ছাড়া এশিয়ার মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। ভারত মহাসাগরের ভৌগোলিক গুরুত্ব আজ আরও বেশি। সে কারণে গোটা দুনিয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ভারত। যত বেশি ভারত অংশগ্রহণ করবে, তত তার গুরুত্ব বাড়বে।’’
২০২০ সালের মে মাসে পূর্ব লাদাখে চিন এবং ভারতীয় সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। গত বছরের শেষে অরুণাচলপ্রদেশের তাওয়াংয়ে লালফৌজের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়। গত ২০ ডিসেম্বর চুশুল-মলডো সীমান্তে চিনের দিকে ১৭তম বার বৈঠক বসেন দুই দেশের সামরিক কর্তারা। সেখানে দুই দেশই পশ্চিম সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার বিষয়ে একমত হয়েছে।
চেন্নাইয়ের অনুষ্ঠানে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি ভারতের অতিমারি নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাকেও কুর্নিশ জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘ভারত কোভিড টিকার সফল উৎপাদক হওয়ার পাশাপাশি আবিষ্কারকও।’’