জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ে অনেকগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। গ্রিডের সমস্যা কবল থেকে বেরিয়ে এলেও সব বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনো উৎপাদনে আসতে পারেনি। সেগুলো উৎপাদনে আসতে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ ।
গত মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৪ মিনিটে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিলে হঠাৎ করে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চার ও পাঁচ নম্বর ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। পরে এক ঘণ্টার মধ্যে ৩৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন চার নম্বর ইউনিটটি চালু করা গেলেও ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচ নম্বর ইউনিটটি চালু করা যায়নি। বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী জানান, সেফটি বাল্ব ফেটে যাওয়ায় পাঁচ নম্বর ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হয়নি।
ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচ নম্বর ইউনিটের নিয়ন্ত্রণকক্ষ সূত্র জানায়, ইউনিট চলার জন্য মেটাল টেম্পারেচার থেকে রোটর টেম্পারেচারের ন্যূনতম ৫০ ডিগ্রি কম বেশি থাকতে হয়, তা নাহলে টারবাইনে সমস্যা দেখা দেয়। হঠাৎ করে কোনো ইউনিট বন্ধ হয়ে গেলে সেটি তাৎক্ষণিক চালু করা না গেলে টেম্পারেচারের মাত্রা ঠিক করতে অন্তত চার থেকে পাঁচ দিন সময় নিতে হয়। বুধবার ইউনিটটি পাওয়ার দেওয়ার পর লোড দেওয়ার সময় দুটি টেম্পারেচার সমপরিমাণ থাকায় তা আর চালু করা সম্ভব হয়নি।
জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পর গত চার দিন ধরে অপরিকল্পিত লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি এবং জেলাগুলোতে ১০ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে মানুষ। প্রতিবারই এক ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় করে লোডশেডিং হয়।
ডিপিডিসি ও ডেসকো বলছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যাওয়ায় তাদের ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এতে সম্ভাব্য শিডিউলের বাইরেও লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, ‘দিনে ও রাতে ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি ঘাটতি হচ্ছে। এতে প্রতিটি ফিডারে (নির্দিষ্ট গ্রাহক এলাকা) অন্তত দুবার, কোথাও তিনবার লোডশেডিং করতে হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পর এখনও সব পাওয়ার প্ল্যান্ট উৎপাদনে আসেনি। সে জন্যই ঘাটতি হচ্ছে।’
লোডশেডিং বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ হোসাইন জানান, ‘জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পর কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনে আসতে সময় লাগছে। এ জন্য লোডশেডিং কিছুটা বেড়েছে।’