জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার বিষয়ক বাংলাদেশের একটি প্রস্তাব জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫০তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। জেনেভায় জাতিসংঘ দফতরে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তৈরি খাদ্য সংকট মোকাবিলা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপের ওপর জোর দিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের এই অধিবেশনে বাংলাদেশ, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের পক্ষে বাংলাদেশের উপস্থাপিত জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার বিষয়ক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তবুও বাংলাদেশের সক্রিয় উদ্যোগে সব রাষ্ট্র এই প্রস্তাবের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে এবং গুরুত্বপূর্ণ এই প্রস্তাবটি উপস্থাপনের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০টি দেশ প্রস্তাবটিতে কোস্পনসর করেছে।
২০০৮ সাল থেকে প্রতিবছর মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশের উদ্যোগে জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার বিষয়ক এ প্রস্তাবটি গৃহীত হয়ে আসছে।
প্রস্তাবটিতে খাদ্য নিরাপত্তা ও মানুষের খাদ্যের অধিকারের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের চরম প্রভাবের প্রতি আলোকপাত করা হয়। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের অতি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে লাখ লাখ মানুষের খাদ্যের অধিকার নিশ্চিতকরণে জরুরি পদক্ষেপের ওপর জোর দেওয় হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্তঃরাষ্ট্রীয় প্যানেলের সর্বশেষ প্রতিবেদনের প্রতি দৃষ্টি আকার্ষণ করে প্যারিস চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অতি জরুরিভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
প্রস্তাবে জলবায়ু পরিবর্তনের অভীঘাত মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের অতি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এসব দেশে আর্থিক ও প্রযুক্তি সহায়তা বৃদ্ধির জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি জরুরি আহ্বান জানানো হয়।
গৃহীত এ প্রস্তাবে মানুষের খাদ্যের অধিকারের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় আলোকপাত করে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে ২০২৩ সালে একটি প্রতিবেদন পেশ করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে অনুরোধ করা হয়। এছাড়া জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারকে ২০২৪ সালে অপর একটি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়। অধিকন্তু, ২০২৩ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের এ বিষয়ে একটি প্যানেল আলোচনা ও একটি সংলাপ এবং ২০২৪ সালে আরও একটি সংলাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।