গাজাযুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের সমর্থিত একটি প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
মঙ্গলবার হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে হামাস। অন্যদিকে তাদের এই অবস্থানকে আশার আলো হিসেবে দেখছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। খবর আলজাজিরা।
তেল আবিবে ইসরায়েলি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজা নিয়ে কী পরিকল্পনা করা হবে সে বিষয়ে আলোচনা চলবে।
এর আগে সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তোলা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়।
সোমবার স্থানীয় সময় বিকালে (বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত) নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ সদস্য দেশের ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। রাশিয়া এই প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল, তবে তারা ভেটো দেয়নি।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তিনটি শর্ত উল্লেখ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে তিন ধাপে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। হামাস ইতোমধ্যে এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি বলেছেন, তারা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন এবং বিস্তারিত আলোচনার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। তবে ইসরায়েল এই প্রস্তাবটি মেনে চলবে তা নিশ্চিত করতে হবে ওয়াশিংটনকে।
আবু জুহরি বলেন, ‘গাজা থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার এবং ইসরায়েলে জেলে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে গাজায় বন্দি জিম্মিদের মুক্তির শর্তও মেনে নিয়েছে হামাস।’
হামাসের এই সিনিয়র কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন এবং অবিলম্বে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দখলদারিত্বকে (ইসরায়েল) বাধ্য করাই হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আসল পরীক্ষা।’
মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে ইসরায়েলে এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। নিরাপত্তা পরিষদের উত্থাপিত প্রস্তাবেই বলা হয়েছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে এবং হামাসকেও এতে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে তাদের এই অবস্থানকে আশার আলো হিসেবে দেখছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
তেল আবিবে ইসরায়েলি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজা নিয়ে কী পরিকল্পনা করা হবে সে বিষয়ে আলোচনা চলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘গাজায় চলমান যুদ্ধের ইতি টানতে নতুন যে যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে, হামাস রাজি থাকলে ইসরায়েলও সেটি মেনে নিবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র।’
মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জন কিরবি বলেছেন, ‘যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস রাজি হলে ইসরায়েলও “হ্যাঁ বলবে’’। আমরা এখন হামাসের কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।’
জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, ‘আজ আমরা শান্তির পক্ষে ভোট দিয়েছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, হামাস এই শর্ত মেনে নিলে ইসরায়েলও সম্মতি জানাবে। বিষয়টি নিয়ে সপ্তাহান্তে দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা চালিয়েছে মধ্যস্থতাকারীরা।