‘বিএনপিসহ যারা পদ্মা সেতু চায়নি, তাদের সমস্ত অপতৎপরতার পর যখন পদ্মা সেতু হয়েছে তখন লজ্জায় তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন।
‘সমগ্র দেশের মানুষ আজকে উচ্ছ্বসিত, পদ্মা সেতু কখন উদ্বোধন হবে সেজন্য উদ্বেলিত এবং এর উদ্বোধনে যাওয়ার সুযোগ দিলে সেতুর ৬ কিলোমিটার মানুষে ভর্তি হয়ে যাবে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মুখে চুনকালি পড়ায় বিএনপি মানুষের এই উচ্ছ্বাস যাতে না থাকে সেজন্য দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়।
মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, সুপ্রিম কোর্টের সামনে সন্ত্রাস করছে, বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশের নামে আবার সন্ত্রাস, গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জনগণকে সাথে নিয়ে এই ধরণের বিশৃঙ্খলা, অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা কঠোর হস্তে প্রতিহত করা হবে।’
‘দেশে বিএনপি’র নেতৃত্বে বিশৃঙ্খলা বা আবার অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের মতো ঘটনা ঘটলে তার দায় তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর তো বটেই, বেগম জিয়ার ওপরও বর্তায় এবং সেজন্যই প্রশ্ন এসেছে, বেগম জিয়াকে এভাবে বাইরে রাখার প্রয়োজন আছে কি না, তাকে আবার কারাগারে ফেরত পাঠানোর দাবি তুলেছে’ উল্লেখ করেন ড. হাছান।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ‘ছাত্রদল নেতারা ছাত্রদের বাবার বয়সী’ বলেন মন্ত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ছাত্রদল-ছাত্রলীগ মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্রদলের উস্কানিতেই এ ধরণের ঘটনা। তারা যখন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চায়, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্ররা বাধা দেবে এটা খুবই স্বাভাবিক। ছাত্রদল যারা করে তাদের বয়স কতো একটু ভাবেন। যারা ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি ওরা কি ছাত্র! বয়স ৪০ এর কোঠায়, ওরা তো ছাত্রের বাবা। সুতরাং ছাত্রদের বাবা স্থানীয় যারা ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের পক্ষ থেকে এসেছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ‘পদ্মা সেতুতে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে’ মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতির মাধ্যমে যারা দেশকে পরপর পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলো স্বাভাবিকভাবেই তারা এসমস্ত কথা বলবে। প্রতিবছর দু’কূল ভাঙ্গা খরস্রোতা পদ্মা নদী এতো বিশাল যে, কোনো কোনো জায়গায় এর প্রস্থ ১৪ কিলোমিটারেরও বেশি। যেখানে পদ্মা সেতু করা হয়েছে সেখানে প্রস্থ অন্য জায়গার চেয়ে কম। এরকম বিশাল খরস্রোতা নদীতে সেতু করা দূরূহ কাজ। এবং এটি নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে, নিজস্ব অর্থায়নে করতে কয়েকবছর সময় নষ্ট হওয়ায় ব্যয় বেড়েছে। এরপরও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যার কারণে সাশ্রয়ী ব্যয়ে সেতু হয়েছে।’
ঢাকায় নির্মাণাধীন মেট্রোরেলে বেশি স্টেশন -বিএনপি মহাসচিবের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব করোনাভাইরাসের প্রকোপ যখন বেশি ছিলো তখন ডাক্তারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন, এখন দেখা যাচ্ছে তিনি ইঞ্জিনিয়ারও হয়ে গেছেন। আমি প্যারিস, লন্ডন, ব্রাসেলসসহ বহু দেশের মেট্রোতে চড়েছি, সেখানে অনেক ক্ষেত্রে এক কিলোমিটারের কম দূরত্বেও স্টেশন আছে। সেসব শহরের তুলনায় ঢাকায় মানুষের ঘনত্ব অনেক বেশি, যানজটও তুলনামূলকভাবে বেশি। সুতরাং এখানে ঘনঘন মেট্রোরেলের স্টেশন হওয়াই যৌক্তিক। তবে যেটি পরিকল্পনা করা হয়েছে সেটি কোনভাবেই প্যারিস, লন্ডনের তুলনায় বেশি ঘন নয়।’