দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরেই তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বুধবার বিকেল ৩টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২২ শতাংশ। এদিকে, তীব্র খরতাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ জনপদের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। অসহনীয় গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বয়স্ক ও শিশুরা।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর ১২টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩১ শতাংশ। বেলা তিনটায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ২২ শতাংশ। এর আগে গত মঙ্গলবার এ জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, চলমান এ তাপপ্রবাহ থাকবে আরও কয়েকদিন। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা হ্রাস পাবে। তবে আপাতত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড় হলে তার সঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে। এটা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।
এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে কাহিল হয়ে পড়েছেন এ জেলার মানুষ। সকালের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের তেজ ও গরম দুটোই বাড়তে থাকে। ফলে ছন্দপতন ঘটছে মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের একটি বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ করছেন কিছু শ্রমিক। এদের মধ্যে সাইফুল আলম নামের এক রাজমিস্ত্রি বলেন, এই কড়া রোদের মধ্যে পাঁচতলা ভবনের উপরে কাজ করছি। মনে হচ্ছে, সূর্য একেবারে মাথার কাছে। প্রচণ্ড গরম লাগছে। কিছুই করার নেই, জীবিকার তাগিদে কষ্ট হলেও কাজ করতে হবে।
একটি বেসরকারি কোম্পানির সেলসম্যান সুভাষ রায় জানান, বাইরে তীব্র রোদ-গরম উপেক্ষা করে ছুটতে হচ্ছে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে। শরীর ঘেমে পোশাক একেবারে ভিজে গিয়েছে। একটু বসে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ দিনশেষে টার্গেট পূরণ করতে হবে।