The news is by your side.

চীনে দাড়ি, বোরকা ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্যও বন্দি করা হয় মুসলিমদের 

0 863

 

দাড়ি রাখা, বোরকা পরা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য চীনের উইঘুর মুসলিমদের অনেককে বন্দি করা হয়েছে। সম্প্রতি উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতনের নতুন ফাঁস হওয়া দলিলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ওই নথিতে পশ্চিম জিনজিয়াং অঞ্চলের তিন হাজারের বেশি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য লিপিবদ্ধ রয়েছে। সেখানে তাদের দৈনন্দিন জীবনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তথ্য বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষজন কিভাবে নামাজ পড়বে, কী পোশাক পড়বে, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা কিভাবে আচরণ করবে তা ১৩৭ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

তবে, চীনের সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে এগুলো দেশটির সন্ত্রাসবাদ এবং ধর্মীয় উগ্রপন্থা মোকাবেলায় নেয়া পদক্ষেপের অংশ।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দলিল অত্যধিক ব্যক্তিগত ঝুঁকি নিয়ে সংগ্রহ করা হয়েছে। গত বছর শিনজিয়াং অঞ্চলের যে সূত্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সরকারি নথি পাওয়া গিয়েছিল, এবারও সেই সূত্রের মাধ্যমেই নতুন দলিলপত্র পাওয়া গেছে।

জিনজিয়াংয়ে চীনের নীতি নিয়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ, ওয়াশিংটনের ভিকটিমস অব কমিউনিজম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো ড. অ্যাড্রিয়ান জেনজ বিশ্বাস করেন যে সবশেষ ফাঁস হওয়া ডকুমেন্ট আসল।

তিনি বলেন, অসাধারণ এই নথিটি এখন পর্যন্ত তার দেখা সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ, সেখানে প্রচলিত ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাভাবিক অনুশীলনগুলোকে সক্রিয়ভাবে নিপীড়ন ও শাস্তি দেয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে।

ওই নথিতে ‘নম্বর ফোর ট্রেনিং সেন্টার’ নামে একটি ক্যাম্পের উল্লেখ রয়েছে। এর আগে চীন সরকারের ব্যবস্থাপনায় গত বছরের মে মাসে ওই ক্যাম্পটি পরিদর্শন করেছিল বিবিসি টিম।

বিবিসি বলছে, তাদের কাছে আসা নথিটিতে ৩১১ জন ব্যক্তি সম্পর্কে তদন্তের বিস্তারিত রয়েছে। এতে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড, ধর্মীয় অভ্যাস, আত্মীয়, প্রতিবেশি ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কের তালিকা রয়েছে। চূড়ান্ত কলামে রায় লেখা রয়েছে। এতে কোন ব্যক্তি বন্দি থাকবে, না তাকে ছেড়ে দেয়া উচিত এবং যারা ছাড়া পেয়েছে, তাদের ফিরে আসতে হবে কি না, এসব বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

ওই শিবিরগুলো স্কুল বলে চীনের দাবির সঙ্গে নথিটির তথ্যের মিল নেই। তাই গবেষক জেনজের যুক্তি, নথিটি চীনা সিস্টেমের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝতে সাহায্য করে।

ওই নথির এক জায়গায় ৩৮ বছর বয়সী হেলচেম নামের এক নারীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত একটি কারণে তাকে পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল, আর তা হলো- কয়েক বছর আগে তিনি পর্দা করতেন বলে জানা গেছে।

অনেকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, তারা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার কারণে তাদের বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়েছে। অর্থাৎ বিদেশে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণকেও জিনজিয়াংয়ে চরমপন্থার একটি লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

নথিতে ২৮ বছর বয়সী নুরমেমেত নামে এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি ‘একটি ওয়েব লিংকে ক্লিক এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে একটি বিদেশি ওয়েবসাইট ব্রাউজ করেছিলেন’, আর তাই তাকে পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, জিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন শিবিরে ১০ লাখের বেশি উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষকে আটক রাখা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই মুসলমান। তবে চীনের দাবি, এগুলো আটকশিবির নয় বরং সংশোধনাগার।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.