চীনের পর এখন দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাস আতঙ্ক প্রকট আকার ধারণ করছে। দিন দিন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে করোনা। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা।
দিন গেলেই এ সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। শনিবার নতুন করে ২২৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগের দিন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৪ জন।
এ নিয়ে দেশটিতে ৪৩৩ জনের ওপর থাবা বসিয়েছে করোনা। দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কিম গ্যাং-লিপ বলেছেন, পরিস্থিতি গুরুতর পর্যায়ে মোড় নিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পাশাপাশি দুটো শহর- দায়েগু এবং চোংডোকে ভাইরাস ছড়ানোর সূত্র হিসাবে দেখা হচ্ছে। সন্দেহের তীর গিয়ে পড়েছে ওই অঞ্চলের শিনচিওঞ্জি নামে ক্ষুদ্র একটি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের দিকে।
দায়েগু এবং চোংডোতে এ ধর্মীয় গোষ্ঠীর কয়েকশ’ সদস্য ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর ছড়ায়। পরীক্ষার পর তাদের অনেকের শরীরেই প্রথম করোনাভাইরাস পাওয়া যায়।
তারপর থেকে নতুন করে ভাইরাস আক্রান্তের যেসব রোগী মিলছে তাদের সিংহভাগই চোংডো শহরের দায়েনাম নামের একটি হাসপাতালে ভর্তি। এ হাসপাতালেই এখন পর্যন্ত ১১৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। কোরিয়ার সেন্টার ফর
ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এক বিবৃতিতে জানায়, শনিবার নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ৯৫ জনই দায়েনাম হাসপাতালে রয়েছে।
একইসঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, আক্রান্তদের অধিকাংশই শিনচিওঞ্জি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অনুসারী। শনিবার পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে যে ৪৩৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ২৩১ জন (নতুন রোগীদের মধ্যে ৬২ জন) অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি রোগী শিনচিওঞ্জি সম্প্রদায়ের সদস্য। শুক্রবার ওই গোষ্ঠীর নয় হাজারেরও বেশি সদস্যকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঘরের মধ্যে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে কিভাবে, কার সূত্রে তাদের এতজন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হলেন।
জানা গেছে, চোংডোতে দিন ১৫ আগে শিনচিওঞ্জি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতার ভাইয়ের মৃত্যুর শেষকৃত্যে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। তারপরই ওই সম্প্রদায়ের পাঁচশ’রও বেশি অনুসারী ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার নানা উপসর্গের কথা জানায়। দায়েগু, চোংডোসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এ দুই শহরের লোকজনকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।