আগামী ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ একটা ট্রেন দিয়ে ট্রায়াল রান করা হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী আগামী ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পূর্বে পরিপূর্ণভাবে তৈরি কিনা, তা নিশ্চিত হতে ট্রায়াল রান হবে।
সোমবার দোহাজারী-কক্সবাজার নবনির্মিত রেলপথ লাইনের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে দোহাজারী এলাকায় গণমাধ্যমে এসব কথা বলেন তিনি। এরপর মন্ত্রী মোটর ট্রলিতে করে দোহাজারী স্টেশন থেকে কক্সবাজার রেললাইন পরিদর্শন করেন। এর আগে সকালে তিনি কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ পরিদর্শন করেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ ধরে মাতারবাড়িতে যে ডীপ সি পোর্ট করা হয়েছে, ভবিষ্যতে সেটির সঙ্গে যুক্ত করা হবে। কাজেই বহুবিধ ব্যবহারের জন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথটি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটির সর্বশেষ অগ্রগতি দেখার জন্য এসেছি। আশা করছি ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এই প্রকল্পটির অবশিষ্ট কাজ শেষ হবে। দুয়েকটা স্টেশনের কাজ হয়তো বাকি থাকবে। তবে রেল চলাচলের জন্য উপযোগী হবে। আমরা মোটর ট্রলি করে এখান থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যাব।
রেলমন্ত্রী বলেন, এখন মানুষ বিমানে-সড়ক পথে কক্সবাজার যায়। মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ট্রেনে করে কক্সবাজার যাবে। সারাদেশের মানুষের এই রেলপথ নিয়ে আগ্রহ ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা সবসময় সাশ্রয়ী নিরাপদ আরামদায়ক। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে উন্নত যাত্রীবাহী কোচ দেওয়ার মতো করে উপযোগী করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ হয়নি। যাচাই-বাছাই করে এটা করব। ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর ভাড়ার বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এই রেলপথ নির্মাণের আগে কক্সবাজারের সঙ্গে কোনো রেল যোগাযোগই ছিল না। শুরুতে এটি ছিল দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প।
রেলমন্ত্রী বলেন, আমাদের ইঞ্জিনটি ১২ টনের। কিন্তু কালুরঘাট সেতু অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এটার সক্ষমতা যাতে বাড়ানো যায়, সে কারণে প্রকল্প গ্রহণ করে সংস্কাকাজ চলছে। এই ব্রিজটি বাদ দিয়ে নতুন একটি ব্রিজ কালুরঘাটে হবে। যেটি এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। আমরা আশা করছি, আগামী বছর এ নতুন সেতুর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ডাবল লেইন মিটারগেজ এবং ফোর লেইনের সড়ক থাকবে একই ব্রিজের ওপর। কাজেই সেটি না হওয়া পর্যন্ত এই ব্রিজটি যেন আমরা ব্যবহার করতে পারি, সেভাবেই এটি তৈরি করা হচ্ছে। ২ নভেম্বর আমরা এখানে আসব এবং ট্রায়াল রান করব।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১২ নভেম্বর উদ্বোধনের পূর্বেই এই রেললাইন ভালোভাবে তৈরি হয়েছে কিনা, সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হতে চাই। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই এই ব্রিজের কাজ শেষ হবে। তবে ছোটখাটো কিছু কাজ থাকতে পারে। একই ব্রিজ দিয়ে ট্রেন যায়, যানবাহন চলাচল করে, মানুষও চলাচল করে। সেই পথচারীদের জন্য আমরা আলাদা করে একটা লেইন করে দিয়েছি। মূল ব্রিজের ভেতরে আসতে হবে না।