দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপ আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় মোখাতে পরিণত হতে চলেছে। এই মুহূর্তে এটি পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৫১০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ১৪৭০ কিলোমিটার এবং মিয়ানমার উপকূল থেকে ১৩৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সমুদ্র থেকে প্রচুর জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করতে করতে এটি অগ্রসর হবে। ফলে কাল-অর্থাৎ ১১ মে সকালে এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং কাল বিকেলের মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে। শক্তি সঞ্চয় সম্পন্ন হলে এটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলের অন্তর্বর্তী কক্সবাজার (বাংলাদেশ) এবং কিউকপ্যু (মিয়ানমার) উপকূল এলাকার মধ্যে কোনো একটি জায়গায় ল্যান্ড ফলের উদ্দেশে এগোবে। ১৪ মে ‘মোখা’র সম্ভাব্য ল্যান্ডফলের আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল।
এটি আরো ঘনীভূত হয়ে প্রথমে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং পরবর্তী সময়ে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সম্পর্কে আবহাওয়াবিদরা বলেন, একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার আগে চারটি ধাপ পার হতে হয়—লঘুচাপ, সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ। পঞ্চম বা শেষ ধাপে গিয়ে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে এবং এর জন্য বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হতে হবে।