The news is by your side.

গুরুত্বপূর্ণ শস্য রফতানি বন্ধ করল ভারত ও রাশিয়া

বিশ্ব জুড়ে সঙ্কটের আশঙ্কা

0 99

 

ভারতের পথে হাঁটল রাশিয়াও। গুরুত্বপূর্ণ একটি শস্য বিদেশে রফতানি সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

শনিবার পুতিনের সরকার ঘোষণা করেছে, আপাতত কিছু দিনের জন্য তারা বিদেশে চাল রফতানি করবে না। অগ্রাধিকার দেওয়া হবে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বাজারকেই।

প্রক্রিয়াজাত চালের যাবতীয় রফতানি নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া। এ ছাড়া, আতপ চালও আপাতত বিদেশে রফতানি করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে পুতিনের সরকার।

রাশিয়া থেকে বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে চাল রফতানি করা হয়। রাশিয়ার চালের দিকে তাকিয়ে থাকে অনেক দেশ। পুতিনের নিষেধাজ্ঞার ফলে সঙ্কটের আশঙ্কা করছে এই দেশগুলি।

চাল রফতানিতে রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা অবশ্য সাময়িক। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রফতানি বন্ধ রাখা হবে। তার পর আবার দেশে দেশে চাল পাঠাবে রাশিয়া।

রাশিয়া সরকার জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারকে স্থিতিশীল করতে চাল রফতানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চালের সঙ্কট তাদের দেশেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতেই এমন সিদ্ধান্ত।

ধানের ফলন কম হওয়ায় চাল উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে রাশিয়ায়। ফলে চালের জন্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছে। দেশের একটা বড় সংখ্যক বাসিন্দার দৈনন্দিন খাদ্য ভাত এবং চালজাত অন্যান্য খাবার।

ক্রেমলিন অবশ্য জানিয়েছে, চালের রফতানির উপর এই নিষেধাজ্ঞা ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলির জন্য প্রযোজ্য নয়। ওই দেশগুলিতে একই ভাবে চাল রফতানি করবে রাশিয়া।

ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলির তালিকায় আছে, বেলারুস, আর্মেনিয়া, কাজাখস্তান এবং কিরগিস্তান। এ ছাড়া, ককেশাস পর্বত ঘেঁষা ওয়েটিয়া প্রদেশ এবং আবখাজিয়া প্রদেশেও চাল রফতানি চালিয়ে যাবে ক্রেমলিন।

পুতিন জানিয়েছেন, তাঁরা চাল রফতানি বন্ধ করলেও অন্য দেশ থেকে রাশিয়ার ভূখণ্ডের উপর দিয়ে চাল পরিবহণ করানো যাবে। মানবিকতার খাতিরে তাতে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে না।

কিছু দিন আগে রাশিয়ার মতো অনুরূপ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লিও। ভারত থেকে চাল বিদেশে রফতানি সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

ভারত সরকার জানিয়েছে, দেশীয় জোগান বৃদ্ধির জন্য বাসমতি বাদে অন্য সমস্ত সাদা চালের রফতানি বন্ধ রাখা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারকে এ বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ভারতে উৎসবের মরসুম আসন্ন। বাজারে আনাজের দামে ছ্যাঁকা লাগার জোগাড়। এই পরিস্থিতিতে চালের রফতানি বন্ধ না করলে দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।

কেন্দ্রীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, ২০২৪ সালে লোকসভা ভোট। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কড়া নির্দেশ, তার আগে চালের দাম বাড়তে দেওয়া চলবে না। আশঙ্কা, গত বছর গমের দাম যে ভাবে সরকারের ঘুম কেড়েছিল, এ বছর একই ভাবে ঘুম ছোটাতে পারে চাল। গমের তুলনায় দেশে চাল বেশি খাওয়া হয়।

ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ভাল চোখে দেখছে না আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ)। এর ফলে বিশ্ব বাজারে চালের সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা। নয়াদিল্লিকে এই নিষেধাজ্ঞা তুলতে অনুরোধ করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।

সারা বিশ্বে ৩০০ কোটির বেশি মানুষের কাছে চাল একটি অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য। এই বিপুল চাহিদার ৯০ শতাংশ আসে এশিয়া থেকে।

রাশিয়া এবং ভারতের রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এশিয়ার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উৎস থেকে চালের জোগান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর প্রভাব অবশ্যই পড়তে চলেছে বিশ্বের বাজারে।

ভারতের চাল রফতানি বন্ধ হওয়ার ফলে বিভিন্ন দেশে প্রবাসী ভারতীয়েরা সমস্যায় পড়েছেন। মজুত রাখা চালের দাম হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে। সেই চালই কিনতে গিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশে।

চাল রফতানি থেকে হাত গুটিয়ে নিয়ে ভারতের দোসর হয়েছে রাশিয়া। এর ফলে বিশ্বের বাজারে আরও কঠিন প্রভাব পড়তে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। চালের চাহিদার সঙ্গে জোগান পাল্লা দিতে পারবে না। ফলে সঙ্কটের মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্ব।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.