The news is by your side.

গাজ়ায় সামরিক আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে ইজ়রায়েলকে:‘সমঝোতার’বার্তা হামাসের

0 113

ইজ়রায়েলের কাছে হামলা থামানোর আর্জি জানাল প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাস। জানাল, ইজ়রায়েলি বন্দিদের মুক্তি দিতে তারা রাজি, তবে শর্তসাপেক্ষে। শর্ত হল, অবিলম্বে গাজ়ায় সামরিক আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে ইজ়রায়েলকে। গত দশ দিনের যুদ্ধে গাজ়ায় নিহতের সংখ্যা ৩৭৪৮ ছাড়িয়েছে। জখম ১২,০৬৫ জন। মঙ্গলবার গাজ়ার আল আহলি হাসপাতালে আছড়ে পড়ে ক্ষেপণাস্ত্র। নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়ায় কালই। তার পরে আর হিসেব নেই। এই হামলার পরেইসমঝোতারবার্তা দিয়েছে হামাস। ইজ়রায়েল অবশ্য হাসপাতালে হামলার দায় নিতে রাজি নয়। হামাসের আর্জির কোনও উত্তরও দেয়নি তারা।

 আলোর সন্তানদের সঙ্গে অন্ধকারের সন্তানদের লড়াই। মানবাধিকার বনাম জঙ্গলের আইনের লড়াই’ —গত কাল এমনই এক টুইট করেছিলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল গাজ়া। এক অতিশক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে আল আহলি হাসপাতালে। হামলার মুহূর্ত পরেই এক্সহ্যান্ডলে ছড়িয়েছিল, ‘ব্রেকিং নিউজ়: গাজ়ায় একটি হাসপাতালের ভিতরে হামাসের সন্ত্রাসঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি বায়ু সেনা।সেই পোস্ট কিছু ক্ষণ পরেই মুছে দেওয়া হয়। একই হ্যান্ডল থেকে পরে লেখা হয়, ‘রহস্যময় বিস্ফোরণ।

 হামাসের রকেট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে, না হলে আন্তর্জাতিক সহানুভূতি পেতে নিজেরাই ঘটিয়েছে।সাংবাদিক বৈঠক করে আজ ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক হামাসকেই দায়ী করেছে। প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছে ইজ়রায়েল সফররত আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মুখে। তিনি বলেছেন, ‘‘এই ঘটনায় আমি আহত। যা দেখছি তাতে বুঝতে পারছি, অন্য পক্ষ এটা করেছে।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জে প্যালেস্টাইনের দূত রিয়াদ মনসুর ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘‘ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী এক জন মিথ্যাবাদী। ওঁর মুখপাত্রই এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছিলেন, ওঁরা ভেবেছিলেন হাসপাতালের কাছে হামাসের ঘাঁটি রয়েছে। সেই ভেবে হামলা চালিয়েছিলেন। পরে উনি সেই পোস্ট মুছে দেন। আমাদের কাছে সেই পোস্টের কপি আছেএখন ওঁরা গল্প বদলে প্যালেস্টাইনিদের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছে।’’

গাজ়ার হাসপাতালে হামলার নিন্দা করেছে সব রাষ্ট্রই। তবে পশ্চিমি দেশগুলোর কারও মুখে ইজ়রায়েলের নাম নেই। কারও নাম না করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের দায় নিতে হবে।’’ চিনও কারও নাম করেনি। ইজ়রায়েলের দাবি প্রসঙ্গে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, হামাসের কাছে কি সত্যিই এত শক্তিশালী অস্ত্র রয়েছে, যা এক নিমেষে গুঁড়িয়ে দিতে পারে একটা গোটা হাসপাতাল? যুদ্ধের প্রথম দিন যখন তারা অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েলে, তখনও তো এত শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েনি তারা! সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনও শোনা যাচ্ছে, হামলার আগে ওই হাসপাতালে হুমকি ফোন এসেছিল। সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েল। দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী আজ সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছে, তাদের কাছে থাকা ক্ষেপণাস্ত্র আরও অনেক বেশি শক্তিশালী। গাজ়ায় সেই যুদ্ধাস্ত্র ছোড়া হলে আরও বড় ক্ষতি হত।

গাজ়ার ওই হাসপাতালের তরফেও একটি সাংবাদিক বৈঠক করা হয়েছে। সেই দৃশ্য ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। চারপাশে মৃতদেহের স্তূপ। তার মাঝে দাঁড়িয়ে বিবৃতি দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ফাদেল নইম জানিয়েছেন, হাসপাতালে অসংখ্য ছিন্নভিন্ন দেহ পড়ে রয়েছে। বহু মানুষ জখম। নইম বলেন, ‘‘হাসপাতালে অনেক মানুষ মারা গিয়েছেন। অনেকে জখম। লোকজন ছুটতে ছুটতে আসছিল। তাঁদের মুখে আর্তনাদ, ‘বাঁচাও, সাহায্য কর।যত জনকে পেরেছি বাঁচিয়েছি আমরা। কিন্তু এই জন তো ডাক্তার! আহতের সংখ্যা সেই তুলনায় অনেক বেশি। বিস্ফোরণের পরে যাঁরা বেঁচেছিলেন, তাঁদের অনেককেই সাহায্য করতে পারিনি, চোখের সামনে মারা যেতে দেখেছি।’’ একটি ব্রিটিশ দৈনিকের সাংবাদিক রুশদি আবুআলউফ জানান, আজও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে প্রিয়জনের দেহাংশ খুঁজে চলেছেন!

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.