আগেই দক্ষিণ গাজ়ায় ঢুকে পড়েছিল ইজ়রায়েল বাহিনী। তখন থেকেই হামাসের সঙ্গে জোর লড়াই চলছে তাদের। গাজ়ার উত্তর প্রান্ত থেকে ভয়ে যে সব মানুষ দক্ষিণ গাজ়ায় আশ্রয় নিয়েছিল, এ বার সেই অংশও ইজ়রায়েলি সেনা ধীরে ধীর দখল করতে থাকায় আবার এখান থেকেও সব ছেড়ে জীবন হাতে নিয়ে পালাতে হচ্ছে তাদের।
দক্ষিণ গাজ়ার খান ইউনিসকে পুরোপুরি দখলে নেওয়ার জন্য সংঘর্ষ চালাচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনা। ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)-এর দাবি, এই খান ইউনিস থেকেই গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে হামলা চালানো হয়েছিল। তাই খান ইউনিসকে হামাসমুক্ত করতেই সামরিক অভিযান আরও জোরদার করেছে তারা। সোমবার থেকে হামলা জোরলো হয়েছে। আকাশপথে হামলার পাশাপাশি, সেনাও তাদের আক্রমণের ঝাঁজ আরও বাড়িয়েছে। সোমবারই খান ইউনিসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল আল-খায়ের দখল করেছে আইডিএফ।
ভূমধ্যসাগর সংলগ্ন আল-মাওয়াসি জেলায় রাতভর সংঘর্ষ হয়েছে হামাস এবং ইজ়রায়েলি বাহিনীর সঙ্গে। সেই সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, গোটা হাসপাতালটিকে অবরুদ্ধ করে সমস্ত পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে ইজ়রায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে। প্যালেস্টাইনি রেড ক্রেসেন্ট-এর দাবি, শুধু আল-খায়েরিই নয়, খান ইউনিসের আরও একটি হাসপাতাল আল-আমালও নিজেদের দখলে নিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। ওই হাসপাতালটির সঙ্গে সমস্ত রকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছেও বলেও দাবি প্যালেস্টাইনি রেড ক্রেসেন্ট-এর। যদিও তা অস্বীকার করেছে ইজ়রায়েল।
খান ইউনিস শহর ইজ়রায়েলের দখলে চলে যাওয়ার পর থেকেই সাধারণ মানুষ ওই শহর ছেড়ে গাজ়ার আরও দক্ষিণে আশ্রয় নিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে বার্তা দিয়েছে আমেরিকা, এই লড়াইয়ে নিরীহ এবং সাধারণ মানুষের যেন মৃত্যু না হয়, সে দিকটাও নজর রাখতে হবে ইজ়রায়েলকে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দিকটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই ইজ়রায়েলকে বার্তা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। রাষ্ট্রপুঞ্জের এক তথ্য বলছে, গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই লড়াইয়ে গাজ়ার ২৩ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে ৮৫ শতাংশই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। চার জনের মধ্যে এক জন অভুক্ত অবস্থায় থাকছেন। কিন্তু ইজ়রায়েল প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ১০০ পণবন্দি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এবং পুরো হামাস বাহিনীকে খতম না করা পর্যন্ত এই লড়াই জারি থাকবে। ফলে এখনই যে লড়াই থামাবেন না নেতানিয়াহু, তাঁর কথা থেকেই তা স্পষ্ট।