বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবে তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। বুধবার (৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোরে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তিনি।
দীর্ঘদিন পরে দলের প্রধানের আগমন উপলক্ষে প্রস্তুতি নিচ্ছেন লন্ডনে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে একটি প্রস্তুতি সভারও আয়োজন করা হয়েছে। সেখান থেকেই কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বলেন, দলীয় চেয়ারপারসনের সফর উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় যুক্তরাজ্য বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনার আলোকে যুক্তরাজ্য বিএনপি বিস্তারিত কর্মসূচি চূড়ান্ত করবে।
তিনি বলেন, ‘ইনশাল্লাহ, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) চিকিৎসা শেষে শিগগিরই দেশে ফিরবেন। ম্যাডামের সফরসঙ্গীরা কোথায় থাকবেন, তা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে দেখভাল করবেন। এখানে আসার পর খালেদা জিয়ার চিকিৎসার যাবতীয় বিষয়ও দেখভাল করবেন তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান।’
সোমবার (৬ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলন করেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। সেখানে তিনি বলেন, মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রা শুরু করবেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কাতারের আমিরের পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ কাতারের রাজধানী দোহা হয়ে লন্ডন পৌঁছাবেন তিনি। সেখান থেকে সরাসরি যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী চলবে খালেদা জিয়ার পরবর্তী চিকিৎসা।
খালেদা জিয়াকে নিতে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবে বলেও জানান ডা. জাহিদ।তিনি জানান, লন্ডন বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে রিসিভ করবেন তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও স্ত্রী ড. জোবাইদা রহমান এবং লন্ডন বিএনপির নেতারা। আর ঢাকা থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে চিকিৎসকদের পাশাপাশি যাবেন তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান।
ডা. জাহিদ বলেন, লন্ডন ক্লিনিক নামে একটি পুরানো হাসপাতাল আছে, সেখানে ম্যাডামকে ভর্তি করানো হবে এবং চিকিৎসা চলবে। এই হাসপাতালে ম্যাডামের পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। তাদের পরামর্শে চিকিৎসার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডা. জাহিদ বলেন, ম্যাডামের যে বয়স এবং তাতে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিটে যাওয়ার পর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে, সেখানে (লন্ডন ক্লিনিকে) এই সুবিধা আছে। সুতরাং তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে। তাই এই বিষয়ে এখন আমরা ভাসাভাসা কথা বলছি। কারণ আমরা জানি না কালকে সফরটা কেমন হবে।
‘খালেদা জিয়াকে লন্ডনের যে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে সেটি সবচেয়ে পুরানো, বিশ্বস্ত এবং আধুনিক সুবিধা সম্বলিত মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টার। সেখানে তাদের সব ধরনের ব্যবস্থা আছে।’
আমেরিকায় চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা যদি খালেদা জিয়ার আমেরিকায় চিকিৎসার সুপারিশ করেন কিংবা জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যদি এমন চিকিৎসা না থাকে, যেটা ম্যাডামের প্রয়োজন তখন বিষয়টি আসবে।
লন্ডন থেকে আমেরিকা যাওয়া প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা এম এ মালেক বলেন, ‘আমেরিকায় যাওয়া-আসাও তার শারীরিক অবস্থার জন্য কষ্টসাধ্য। আমরা জানতে পেরেছি, এ কারণে লন্ডনেই চিকিৎসা শেষ করে ফেরার সময় ওমরাহ করে দেশে ফিরতে চান বেগম জিয়া। আর লন্ডনের চিকিৎসকরা যদি মনে করেন, আমেরিকাতে তার চিকিৎসা প্রয়োজন, তাহলেই তাকে আমেরিকায় নেওয়া হবে।’