কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ক প্রতিবেদন উচ্চ আদালতে পৌঁছেছে। প্রতিবেদনটি বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
মো. সাইফুর রহমান বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএসএমএমইউর আইনজীবী তানিয়া আকতার বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে হস্তান্তর করেন।
আদালত এই প্রতিবেদন দেখে খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত দেবেন।
এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্পর্কিত তিন অবস্থার তথ্য জানতে চান হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট জানিয়েছেন, বিএসএমএমইউর প্রতিবেদনে আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কিনা, সম্মতি দিলে মেডিকেল বোর্ড চিকিৎসা শুরু করেছে কিনা এবং শুরু হলে বর্তমানে তার অবস্থা কী, সেসব উল্লেখ করতে হবে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তিনি খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা আদালতে উপস্থাপন করেন। ‘মানবিক কারণে’ খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে তিনি আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। বিএসএমএমইউ হাসপাতালে তার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না। তাই দ্রুত তাকে যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশে নিয়ে আধুনিক, উন্নত চিকিৎসা বা থেরাপি দেওয়া প্রয়োজন। জামিন পেলে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান।
আদালত আদেশে বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপিল বিভাগের নির্দেশে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ওপর একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রিপোর্টটি আমলে নিয়ে তার জামিন আবেদন খারিজ করা হয়। আপিল বিভাগ তার আদেশে বলেন, খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসা নিতে চাইলে তাকে যেন দ্রুত সেই চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ প্রেক্ষাপটে হাইকোর্ট বিএসএমএমইউ উপাচার্যকে তার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
গত বছর ৩১ জুলাই হাইকোর্টের এই বেঞ্চ চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করে দেন। এর পর ওই খারিজ আবেদনের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগ গত ১২ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন। এ রায় গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়ার পর হাইকোর্টে নতুন করে জামিনের আবেদন করার উদ্যোগ নেন তার আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার কারামুক্তিতে এখন অন্তত দুই মামলায় জামিন পেতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।