মুক্তি পেয়েছে ‘রঙ্গুন’। ছবি কেমন চলছে, সেটা পরের কথা। কিন্তু ছবির নায়িকা কঙ্গনা রানাওয়াত সোজা কথা সোজা ভাবেই বলেন।
আচ্ছা কঙ্গনা রানাওয়াত মানেই কি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং একটা চরিত্র! ‘রঙ্গুন’কে কি সেইজন্যই বাছলেন?
আরে পরিচালকরা একটু কঠিন চরিত্রই আমাকে দেন। হয়তো আমি তাঁদের মনে এই বিশ্বাসটা জাগাতে পেরেছি, যে এই চরিত্রটা আমি ভাল করে পরদায় ফুটিয়ে তুলতে পারব। এটা কিন্তু একদিনে হয়নি। ধীরে-ধীরে আমি নিজে এই জায়গাটা তৈরি করতে পেরেছি।
তা চরিত্রটা কেমন লাগল?
বিশাল ভরদ্বাজের সিনেমায় প্রতিটি চরিত্রটিরই নানা শেড্স থাকে। ‘রঙ্গুন’-এ আমার চরিত্র জুলিয়ারও নানা শেড্স আছে। জুলিয়া উপরে ওঠার জন্য ঠিক-ভুল, ভাল-মন্দ বিচার করে না। জুলিয়া একজন সেলেব্রিটি। ভাল নাচতে জানেন। আমি প্রথমে জুলিয়াকে বোঝার চেষ্টা করি। নিজেকে ওর জায়গায় বসাই। আর হ্যাঁ, নাচ শিখতে হয়েছে আমাকে।
জুলিয়ার ডার্ক শেড্স তো বুঝলাম। কঙ্গনার ডার্ক শেড্স আছে কি?
হ্যাঁ আছে তো। কাছের লোকেরা বলে আমার অতিরিক্ত বাস্তববোধই আমার উইকনেস। যদিও আমি নিজে সেটা বিশ্বাস করি না। আমি কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় একটু অতিরিক্ত কঠোর হয়ে পড়ি বটে। কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাহসী হওয়ারও দরকার। আমি নিজেকে সাহসী ভাবি। এর জন্য আমাকে অনেকে আবেগহীন ভাবে। কিন্তু ওটাও ভুল।
আচ্ছা ১০ বছর তো এই ইন্ডাস্ট্রিতে হয়ে গেল। আজকে যদি বিচার করতে বসেন, তাহলে নিজের স্ট্রং আর উইকনেস খুঁজে পান?
পারি তো। প্রথমে নিজের স্ট্রং পয়েন্টগুলো বলি। আমি নিজের স্কিল বুঝে কাজ করি। সাফল্য পাওয়ার পর সেই প্রসেসটাই অনুসরণ করি। ক্রমাগত নিজেকে ভাঙি আর গড়ি। একটা চরিত্রের পিছনে প্রচুর খাটি। সাফল্যকে কখনও টেকেন ফর গ্রান্টেড নিইনি। আর উইকনেস হল আমার জেদ। আমার যদি মনে হয়, একটা কাজ করব, আমি সেটাই করে ছাড়ব। কারও কথা শুনব না। তাতে ফল খারাপ এলেও আমার কিছু এসে যায় না।
কঙ্গনা আপনার প্রতিটি চরিত্রর মধ্যে কোনও মিল নেই। ফলে দর্শকের একটা এক্সপেকটেশনও তৈরি হয় প্রতিবার আপনি নতুন কিছু তাদের উপহার দেবেন। আপনি চরিত্র নির্বাচনের সময় চাপ অনুভব করেন?
চাপ নয় ঠিক। আমি চরিত্রগুলোকে কীভাবে দেখি জানেন, প্রথম স্কুল কমপ্লিট হল, তারপর হাই স্কুল হয়ে গ্রাজুয়েশন। মানে কঠিন চরিত্র থেকে কঠিনতর চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। তবে প্রতিটি স্টেজই আমি এনজয় করেছি। আমি সব ধরনের ছবি করতে পারি না এবং করবও না। প্রতিদিন আমার কাছে প্রচুর স্ক্রিপ্ট জমা হয়। তার মধ্যে কিছু বায়োপিক থাকে, সেগুলোকে প্রথমেই বাদ দিয়ে দিই। আমার বায়োপিকে অভিনয় করতে ভাল লাগে না। ‘তনু ওয়েডস মনু রিটার্নস’-এ অভিনয় করার পর থেকে ডাবল রোল করার ইচ্ছেটাও মরে গিয়েছে। স্ক্রিপ্ট নেওয়ার আগেই ভেবেনি বলে চাপটা কম থাকে।
‘রঙ্গুন’-এ বিশাল ভরদ্বাজের সঙ্গে কাজ করলেন। কেমন লাগল?
খুব বড় মাপের ডিরেক্টর। নিঁখুত কাজ করেন। ‘রঙ্গুন’-এর এতো বড় সেট আপ সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকা। অন্য কোনও পরিচালক হলে এটা সামলাতেই পারত না। ওঁর সঙ্গে কাজ করে অনেক শিখেছি।
সেফ আর শাহিদকে কেমন লাগল?
সেফ ভীষণ চার্মিং। ওঁর কথার মধ্যে এমন একটা চার্ম আছে না, যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যাবে। সেন্স অফ ইউমার খুব ভাল। শাহিদ একটু চুপচাপ থাকা পছন্দ করেন। তবে দু’জনেই ভাল অ্যাক্টর।
গত বছর আপনার আর হৃতিকের সম্পর্ক নিয়ে প্রচুর জলঘোলা হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হল কী?
এখন সমাধান দেখে কী হবে! যাঁরা (হৃতিক এবং কঙ্গনা) এই বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন, তাঁরা নিজেদের জীবনে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন। ইন্ডাস্ট্রিতে এমন রোম্যান্টিক লিঙ্ক আপস হয়, তারপর সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে সেগুলো মরেও যায়। ইন্ডাস্ট্রিতে এর চেয়েও বড়-বড় কেস হয়, কোর্ট কেস হয়, এখানে সেরকম কিছু হয়নি, হবেও না। আমার জীবনে এর চেয়ে বড় ক্রাইসিস এসেছিল, যখন আমার বোন রঙ্গিলার মুখে অ্যাসিড ছোঁড়া হয়েছিল। এটা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করার কোনও মানেই হয় না।