সঞ্জয় দত্ত। স্ত্রী রিচা শর্মা! মস্তিষ্কের ক্যানসারের বলি হন। তাই নিজের যখন ক্যানসার ধরা পড়ল, সঞ্জয় অত্যন্ত নিস্পৃহ হয়ে গিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, এই সুযোগ, মৃত্যু এলে আসুক না!
২০২০ সাল। ‘শমশের’র শুটিং চলছে। তখনই সঞ্জয় জানতে পারেন তাঁর ক্যানসার হয়েছে। একটুও বিচলিত হননি। কাজ করতে লাগলেন চুপচাপ। তার পর ছবির প্রচারে এসে নিজমুখেই জানিয়েছিলেন, মারণরোগ আবার বাসা বেঁধেছিল, কিন্তু তিনি পাত্তা দেননি। চিকিৎসকের কাছেও যেতে চাননি। যদিও তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা দত্ত দায়িত্ব নিয়ে সব কিছুর ব্যবস্থা করান। তাই প্রাণে বেঁচে যান সঞ্জয়।
করোনা আবহ, লকডাউন চলছে তখন। কোনও এক অলস দুপুরে স্নান সেরে সিঁড়ি দিয়ে উঠছিলেন ‘মুন্নাভাই’। হঠাৎ বোন প্রিয়ঙ্কা এসে দাদাকে দুঃসংবাদ দেন। স্বাস্থ্যপরীক্ষার রিপোর্ট বলছে ক্যানসার হয়েছে সঞ্জয়ের। শুনে কিছু ক্ষণ স্তব্ধ হয়ে থাকেন তিনি, তার পরই ঝেড়ে ফেলেন।
পরে দফায় দফায় আরও স্বাস্থ্যপরীক্ষা। এক্সরে রিপোর্ট আসতে দেখা গেল, ফুসফুসের অর্ধেক জলে ভর্তি। পরিবারের আশা ছিল, হয়তো যক্ষ্মা হয়েছে অভিনেতার। কিন্তু না, পরে জানা গেল ক্যানসারই।
২০২০ সালের অগস্টে সঞ্জয় সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘‘আমার ছেলে-মেয়েদের সব থেকে ভাল উপহার দিতে চলেছি। নিশ্চিত ভাবে বেঁচে ফিরব আমি।’’ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিন বছর আগের সেই ভয়াবহ স্মৃতির কথা ভাগ করে নিয়েছেন ‘কেজিএফ-২’-এর দুঁদে নায়ক। কী ভাবে মারণরোগের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন তিনি, কেমন করে কেমোথেরাপি নিয়েও জারি রেখেছিলেন শরীরচর্চা— সব।
সঞ্জয় ভেবেছিলেন বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাবেন। কিন্তু ভিসা পাননি। পরে অভিনেতা হৃতিক রোশনের বাবা, অভিনেতা-প্রযোজক রাকেশ রোশন ভাল এক ক্যানসার বিশেষজ্ঞের খোঁজ দেন।
সঞ্জয় হেসে বলেন, যখন ডাক্তার তাঁকে চুল পড়া এবং বমির বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন, তখন তিনিও বলেছিলেন ‘‘মেরেকো কুছ না হোগা (আমার কিছুই হবে না)।’’ শুধু তা-ই নয়, প্রত্যেক বার কেমোথেরাপির পরে রোজ এক ঘণ্টা বসে বসে সাইকেল চালাতেন অভিনেতা। দুবাইয়ে কেমোথেরাপি নিতেন। তার পরে দু’তিন ঘণ্টা ব্যাডমিন্টন খেলতেন।