শবনম ফারিয়া
পর্দার সামনে কিংবা পিছনে , যে যেই ক্ষেত্রেই কাজ করে, সবাই মানুষ। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে একভাবেই বানিয়েছে।
যিনি ব্যাংক এ কাজ করেন, শিক্ষিকতা করেন, কর্পোরেট কাজ করেন কিংবা চিকিৎসক, তার হাত-পা কাটলে যেমন ব্যথা পায়, যারা পর্দার সামনে কাজ করে তারাও সেইম ব্যথা পায়।
সবার পৃথিবীতে আসার প্রসেসটা সেইম, মৃত্যুর পর মুসলিম হলে কবর, অন্য ধর্ম হলে সেই অনুযায়ী শেষকৃত্য হয়। সৃষ্টিকর্তা এমন কোনো নিয়ম রাখেননি যে, ওমক পেশায় কাজ করলে তার কবর হবে না, কিংবা ভিন্ন নিয়মে কবর হবে!
পর্দার সামনে কিংবা যেকোন পেশায় কাজ করলেও সবার একটা ব্যক্তিগত জীবন থাকে, সেখানে অনেক উঠা নামা থাকে! একটা মানুষ কত স্বপ্ন, আশা নিয়ে কারো সাথে সংসার শুরু করে জানেন? যখন কোনো কারণে সংসার করা সম্ভব হয় না সেইটা কত কষ্টের জানেন?
বিশ্বাস করেন , সবার পরিবার থাকে! পর্দার সামনে যারা কাজ করে তারা কেউ সমাজ বা পরিবারের বাইরের না !
ধরেন কোন কারণে আপনার বোন এর সংসার টিকলো না, আর আশেপাশের মানুষ না জেনে তাকে আজেবাজে কথা বলছে, আপনার মার কিংবা আপনার কেমন লাগবে? বিশ্বাস করেন , সবার মা ভাই/বোনদেরও সেইম লাগে !
আমি ব্যক্তিগত ভাবে আমারটা বলতে পারি, ২০২০ পর্যন্ত অভিনয়ই ছিল আমার পেশা, আমার পরিবারের হাজারটা বাঁধার পরেও আমি অভিনয় করেছি, কারণ কাজটা আমি ভালোবাসি। ভালো একটা স্ক্রিপ্ট আসলে এক্সাইটমেন্ট এ আমার রাতে ঘুম হয় না! যদিও লাস্ট দুই বছর আমি আর আগের মতো কাজ করি না কিংবা বিভিন্ন কারণে খুব কম কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি !
কিন্তু যখন কাজ করতাম , এইটা আমার কাছে আর ১০টা কাজের মতোই ছিল, সকালে উঠে শুটিং এ যেতাম, রাতে বাসায় আসতাম , শুক্র শনি খুব আর্জেন্ট না হলে শুটিং করতাম না ! পার্থক্য একটাই ছিল, অন্যরা ৯-৫ কাজ করে, আমাদের ১১-১১ টা কাজ করতে হয়!
এখন কাজের ধরনের জন্য আপনারা পর্দার সামনের মানুষদের চেনেন, কাউকে আপনাদের ভালো লাগে , কাউকে কম ভাললাগে, কাউকে হয়তো ভালো লাগেই না!
সেইটা স্বাভাবিক। কিন্তু একটা মানুষ তার কষ্টের কথা বলছে, আর আপনার হাতে একটা ফোন আছে তাই আপনি যা ইচ্ছা বলে দিলেন , এইটা খুব খুব খারাপ একটা প্রাকটিস! শুধু শুধু কাউকে কষ্ট দেয়া একটা অপরাধের সমান !
এইসব আর করবেন না প্লিজ, কারো কষ্ট কমাতে না পারলে কষ্ট বাড়ানোর কাজে ভূমিকা রাখবেন না । বিশ্বাস করেন, কেউ ইচ্ছা করে কারো সংসার ভাঙে না ! যে যেই পেশাই থাকে সবাই স্বামী/সন্তান নিয়ে সুখে থাকতে চায়।