গাজীপুর কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি শামীমা নূর পাপিয়ার মারধর ও নির্যাতনের শিকার রুনা লায়লা মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন। তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ৭০৭ নম্বর কক্ষে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কারাগারের মারধরের পর থেকে অসংলগ্নভাবে কথাবার্তা বলছেন। রবিবার (২ জুলাই) বিকালে তার বোন রওশন আরা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘হাসপাতালে বোনের অবস্থা এখনও খুব একটা ভালো মনে হচ্ছে না।’
রুনা লায়লা গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে এবং জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগকারী আব্দুল করিমের বোন।
হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে রুনা বলেন, ‘শনিবার (১৭ জুন) ভোর ৫টায় মাইকিং করে আমাকে কারাগারের বিচার বৈঠকে যেতে বলে। সকাল ৯টায় বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি ময়লা পরিষ্কার করতে যাই। বিকাল ৪টায় থালা-বাসন পরিষ্কার করি। বিকালে আমাকে আমার কক্ষ থেকে বদলি করে পাপিয়ার অধীনে ৪০১ নম্বর কক্ষে দেওয়া হয়।
তার দাবি, ‘পরদিন রবিবার ভোর ৫টায় সোনালী নামে একজন মাইকিং করে তাকে বিচার বৈঠকে আসতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর আবার ওপরে উঠি শৌচাগারে যাওয়ার জন্য, এরপর তার নামতে দেরি হয়। এটাই ছিল আমার অপরাধ। সকাল ৭টার দিকে ফাতেমা নামে একজন আমাকে ডেকে নেয়। সে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আত্মরক্ষার্থে হাতের লাঠি ফেরানোর চেষ্টা করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আরও মারধর শুরু করে। কিছুক্ষণ পরে একটা হাতুড়ি নিয়ে এসে আমাকে আঘাত করলে পড়ে যাই। পড়ে যাওয়ার পর লাথি মারে। এ সময় হঠাৎ সালমা এসে হাজির হয়। সে এসে আমার পরনের জামাটা ছিঁড়ে ফেলে।’
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘ওই নারী গোপনে সাত হাজার ৪০০ টাকা নিয়ে কারাগারে আসেন। বিষয়টি পরদিন তদন্ত করে পাওয়া যায়। টাকার বিষয়ে কারাগারের হাবিলদার ফাতেমা বেগম জানতে চাইলে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এ নিয়ে কয়েকজন কয়েদি তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাকে যারা চড়-থাপ্পড় মেরেছিল, তাদের কারাবিধি অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হয়েছে।’