বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কার ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগ হয়েছে– মার্কিন নীতি অনুযায়ী তা গোপনীয় বিষয়। তবে এ-সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি মৌলিক প্রশ্ন দেখা দিলেও উত্তরগুলো এড়িয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসা নীতি ঘোষণা করার পর জনসাধারণের মনে যেসব প্রশ্ন দেখা দেয়, তার উত্তর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সমকালের পক্ষ থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে ই-মেইলের মাধ্যমে জানতে চাওয়া হয়েছিল– কেউ কীভাবে জানবে, সে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। ভিসা নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তির পরিবার যদি যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভিসা নিয়ে বসবাস করে, তাহলে তার পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে কি তা প্রয়োগ হবে? আর ভিসা নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তির পরিবার যদি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হয়, তাহলে তার ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? সেই সঙ্গে কতজন বাংলাদেশির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে?
রেফারেন্স নং-০০৩১১০৫২-এর উত্তরে জানতে চাওয়া উল্লিখিত কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। তার পরিবর্তে বাংলাদেশ সময় গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে করা প্রশ্ন ও উত্তর সমকালকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমরা আগেও যেমনটি বলেছি, এখনও তেমনই বলছি– মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন যখন এই ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন, তখন থেকেই আমরা বলছি– বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষ নেবে না। তবে নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়– তা নিশ্চিতে সমর্থন করে। শুক্রবার আমরা যখন নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছি, এর মধ্যে আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা, মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো নিয়ে বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের মুক্ত গণমাধ্যম ও মানবাধিকার নীতির পরিপন্থি কিনা– জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, ভিসা নথি গোপনীয়। তাই আমরা কারও নাম বা সংখ্যা প্রকাশ করিনি। বিশ্বের নানা দেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সংখ্যা প্রকাশ করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সংখ্যা প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাছে কোনো প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া গেলেও ঢাকার মার্কিন দূতাবাস সমকালের জানতে চাওয়া কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেন, এ নীতির আওতায় যাদের ভিসা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তাদের ব্যক্তিগতভাবে আমরা জানিয়ে দেব। যাদের ভিসা বাতিল বা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তাদের জানিয়ে দেওয়া আমাদের রীতি রয়েছে। যাদের এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নেই, তাদের এ বিষয়ে কোনো তথ্য থাকবে না। তবে ভিসা আবেদনের পর তারা জানতে পারবেন। এ ভিসা নীতি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য নয়।