কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া দাগি অপরাধীদের ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। আপৎকালীন মজুত সেনাদের (রিজার্ভ সেনা) যুদ্ধে নিযুক্তির আইনে সংশোধনী আনার মধ্য দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানোর জন্য গত সেপ্টেম্বরে দেশের অভ্যন্তরে ‘আংশিক সেনা নিযুক্তি’র আদেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এর আওতায় আপৎকালের জন্য মজুত সেনাদের মধ্য থেকে ৩ লাখ সেনাকে ডাকার নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এ ঘোষণার পর হাজারো মানুষকে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য তলব করা হয়। মজুত সেনাদের তলবের ঘোষণা দেওয়ার পর ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতাকারী হাজারো রুশ নাগরিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আপৎকালীন মজুত সেনাদের তলব করার আইনে সংশোধনী এনেছেন। এর মধ্য দিয়ে সদ্য কারাগার থেকে বের হওয়া গুরুতর অপরাধীদেরও আপৎকালীন মজুত সেনার তালিকায় যুক্ত করা হবে।
তবে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নকারী কিংবা সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত সাবেক কারাবন্দীরা এর আওতায় থাকবে না।
রাশিয়ার আইন অনুযায়ী, বিদেশে নিযুক্ত সেনাদলের সঙ্গে কাজ করার শর্তে কারাবন্দীদের মুক্তি দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে দেশটির বেসরকারি আধা সামরিক সংস্থা ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন কারাবন্দীদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেন, যারা তাঁর প্রতিষ্ঠানে কাজ করবে তাদের কাউকে আর জেলে ফিরতে হবে না। শুক্রবার ওয়াগনার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে প্রথমবারের মতো সদর দপ্তর খুলেছে।
পুতিন বলেছেন, দেশের তিন লাখ আপৎকালীন মজুত সেনার মধ্যে গত সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৯ হাজার সেনাকে ইতিমধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে মোতায়েন করা হয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীও যুদ্ধে যোগ দিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
পশ্চিমা বিশ্ব এবং ইউক্রেনের সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুতিন মজুত সেনাদের ডেকে পাঠানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে বোঝা যাচ্ছে, রুশ সেনারা ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যর্থ হয়েছে।
রুশ সেনারা ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ করছে বলে অভিযোগ করে আসছে কিয়েভ। সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ গঠিত ইউক্রেনবিষয়ক স্বাধীন ধারার আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসামরিকদের হত্যাসহ রুশ বাহিনী বেশ কিছু যুদ্ধাপরাধ করেছে।