ভারতে বসবাসকারী কানাডার নাগরিকদের সতর্ক করল জাস্টিন ট্রুডো সরকার। প্রবাসী কানাডিয়ানদের জন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়ে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সেখানে নাগরিকদের ভারতে সাবধানে এবং সর্বক্ষণ সতর্ক থাকতে বলেছে কানাডা সরকার।
খলিস্তানপন্থী শিখ নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের প্রভাব পড়েছে ভারত এবং কানাডার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। গত কয়েক দিনে একাধিক ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্কের অবনতির ইঙ্গিত মিলেছে। ভারতে সমাজমাধ্যমে কানাডাবাসীর প্রতি ‘নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি’ ফুটে উঠেছে বলে দাবি। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে ভারতে প্রবাসী কানাডিয়ানদের সতর্ক করেছে ট্রুডো সরকার।
কানাডার তরফে বিবৃতিতে সে দেশের নাগরিকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ‘‘কানাডা এবং ভারতের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের সাপেক্ষে সমাজমাধ্যমে কানাডার প্রতি কিছু ‘নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি’ চোখে পড়েছে। কোথাও কোথাও আন্দোলন, বিক্ষোভের ডাকও দেওয়া হচ্ছে। দয়া করে সাবধানে থাকুন, সতর্ক থাকুন।’’
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে কানাডায় প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য অনুরূপ একটি পরামর্শমূলক বিবৃতি জারি করেছিল ভারত সরকারও। কানাডায় ভারতীয় নাগরিক, বিশেষত পড়ুয়ার সংখ্যা প্রচুর। তাঁদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল। গত সপ্তাহে কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে ভারত।
গত জুন মাসে কানাডার শিখ নেতা নিজ্জরকে আততায়ীরা গুলি করে খুন করে। তদন্তের পর এই ঘটনায় ‘ভারতীয় এজেন্ট’ দের হাত আছে বলে হাউস অফ কমন্সে প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। কানাডার এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কারও করা হয়। এর পরেই ভারত-কানাডার সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। ভারত সরকার কানাডার অভিযোগ উড়িয়ে দেয় এবং এর কড়া বিরোধিতা করে। ভারতে কানাডার এক কূটনীতিককেও পদচ্যুত করে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয় নয়াদিল্লি। ভারতের পাল্টা অভিযোগ, এ দেশে নিষিদ্ধ খলিস্তানি সংগঠনের সদস্যদের কানাডায় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ভাবে আসলে জঙ্গিদের প্রশ্রয় দিচ্ছে ট্রুডো সরকার।
দুই মিত্র দেশের মধ্যে সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয় গত সোমবার, যখন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সেদেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেন যে হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতের সরকারি এজেন্সিগুলির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ভারত আর কানাডা দুই দেশই একে অপরের একজন করে শীর্ষ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।
বিশ্বের নজর এখন এই বিবাদের দিকে রয়েছে।এই পরিস্থিতিতে কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয়দের জন্যও উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে।
বিশেষত ভারতীয় শিক্ষার্থীরা, যারা উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডার বিভিন্ন রাজ্যে বসবাস করছেন এবং সেইসব ভারতীয়রা, যারা এখন কানাডার কর্মশক্তির একটি সক্রিয় অংশ হয়ে উঠেছেন।