কক্সবাজার অফিস
এক পর্যটককে আড়াই ঘন্টা আটকে রেখে লাঠি দিয়ে পিঠিয়ে আহত করে খালি কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে কক্সবাজারে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিরুদ্ধে। ১১ আগস্ট সকাল ৬ টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ঘটনাটি ঘটে। আহত পর্যটক কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার গুলজারনগর এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে মো. নাজমুল হাসান।
এ ঘটনায় পর্যটক হাসান লিখিত অভিযোগ করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলে অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন জেলা প্রশাসন।
আহত পর্যটক নাজমুল হাসান জানান, শান্ত নামের তার এক ভাতিজাকে নিয়ে ৯ আগস্ট রাতে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন এবং পরদিন ভোরে কক্সবাজারের পৌঁছেন। কক্সবাজার শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় হোটেল ড্রীম গেস্ট হাউজে ৪০১ ও ৪০২ নাম্বার কক্ষে উঠেন।
একটু বিশ্রাম নিয়ে সকাল সাড়ে ৫ টায় হাসান মোটরসাইকেল নিয়ে কক্সবাজার শহরের সুগন্ধা পয়েন্টে দিয়ে সমুদ্র সৈকতে নামেন। এসময় কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ পরিদর্শক (এস আই) আমজাদ হোসেন তাদেরকে গতিরোধ করে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যান। মোটরসাইকেল নিয়ে সৈকতে নামার অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিঠায় পর্যটক নাজমুলকে। নাজমুল ও তার ভাতিজা শান্তকে আড়াই ঘন্টা আটকিয়ে রেখে পরে খালি কাগজে দু’জনের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন।
পরে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আহত নাজমুল হাসান সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট অবস্থিত জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার অভিযোগ সেলে লিখিত অভিযোগ দেন।
নাজমুল হাসান বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ে তাকে লাঠি দিয়ে পেঠানোর সময় ক্ষমা চেয়েও রক্ষা পাননি। উল্টো তাকে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর হুমকি দেন।
নাজমুল বলেন,’ কোন দোষ থাকলে আমাকে মামলা দিয়ে জেলে পাঠাতে পারত কিন্তু তা না করে আমাকে লাঠি দিয়ে যেভাবে পিছিয়েছে তা একজন চোর কিংবা ডাকাতকে পেঠানো হয়কিনা সন্দেহ রয়েছে।
নাজমুল হাসান আরো বলেন, ‘আমাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার সময় দু’জনের কাছ থেকে খালি কাগজে স্বাক্ষরও নিয়েছেন। এখন ভয় পাচ্ছি ওই কাগজ নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোন কিছু করে কিনা!
ধরে নিয়ে কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে ট্যুরিস্ট পুলিশের এসআই আমজাদ হোসেন বলেন, নাজমুলকে কোন মারধর করা হয়নি তবে তার সাথে যে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে তা আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেছে।
অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে পর্যটন সেলের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ওনারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেভাবেই কাজ করা হবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্তৃক পর্যটককে মারধরের বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। খোঁজ খবর নিয়ে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) জিল্লুর রহমান একাধিক বার ফোন করেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।