সাক্ষ্য-প্রমাণ আর ইলেকট্রনিক ডিভাইসের আলামতসহ সব মিলিয়ে এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলা কনক্লুসিভ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কলকাতায় উদ্ধার হওয়া খণ্ডিত মাংস ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের। তবে ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পেলে নিশ্চিত হতে পারব।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় কলকাতা থেকে একটি ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
হারুন বলেন, কলকাতায় আমাদের তদন্তকাজ সফল হয়েছে। সংসদ সদস্য আজিম হত্যাকাণ্ড নিয়ে যেসব তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে গিয়েছি, তা পেয়েছি। আলামত উদ্ধার, পারিপার্শ্বিক ডিজিটাল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করায় আনার হত্যার তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে।
তিনি বলেন, এমপি আজিমের হত্যার মুটিভ সংগ্রহে কাজ হয়েছে। তিনি নতুন কোনো ব্যবসার উদ্দেশে ভারত গিয়েছিলেন কিনা সেটি নিয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তার হত্যার পেছনে এলাকার রাজনীতি কতটুকু প্রভাব রেখেছে সেগুলোও আমাদের কাছে বিবেচ্য।
তিনি বলেন, আমাদের আরও একটি বিষয় ছিল, সেটি হলো স্বচক্ষে ডিজিটাল এভিডেন্সগুলো মিলিয়ে দেখা। এমপি যার বাসায় ছিলেন, সেই গোপাল বাবুর সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি।
ডিবি প্রধান বলেন, কলকাতায় খুন হওয়া বাংলাদেশের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে ইতোমধ্যে এক নারীসহ তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এক্ষেত্রে ওয়াটার থিওরি ব্যবহার করেছি। আমরা সিআইডি পুলিশকে রিকোয়েস্ট করেছি। আসামিদের ব্যবহৃত কমোড, সেপটিক ট্যাংক চেক করতে বলেছি। সেখান থেকেই মরদেহের অনেক অংশ উদ্ধার হয়েছে। যে উদ্দেশে এসেছিলাম আমরা কিন্তু একশ ভাগ সফলতা নিয়েই বাংলাদেশে ফিরছি।
হারুন বলেন, প্রাথমিকভাবে সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংস এমপি আনারের মনে করা হলেও এ ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত হতে ফরেনসিক এবং ডিএনএ টেস্ট জরুরি। আনুষ্ঠানিকভাবে সিআইডিকে চিঠি দিয়ে এসব মাংসের টুকরো বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উদ্ধার করা মাংস এমপি আনারের মরদেহের কি না তা পরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে (সিএফএসএল) নমুনা পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্টও করা হবে। সেক্ষেত্রে এমপি আনারের কন্যা মুমতারিন ফিরদৌস ডরিনকে কলকাতায় ডাকা হতে পারে। ডিবিপ্রধান বলেন, আমরা সিআইডিকে অনুরোধ জানিয়েছি এই পরীক্ষাগুলো যেন দ্রুততার সঙ্গে করা হয়। ডিএনএ টেস্ট করার জন্য এমপি আনারের কন্যা ডরিন শিগগির কলকাতা আসবেন। ভারতে আসার জন্য সম্ভবত তিনি ভিসাও পেয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় আসে গোয়েন্দা প্রধানের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। কলকাতা থেকে তারা যান নিউটাউন থানায়। এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) সঙ্গে নিয়ে তারা কৃষ্ণমাটি বাগজোলা খাল পরিদর্শন করেন। এরপর যথাক্রমে নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনস, সিআইডি ভবন, হাতিশাল খালসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করার পাশাপাশি কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, সিআইডি এডিজি আর রাজাশেখরণের সঙ্গেও কথা বলেন ডিবিপ্রধান হারুন।