বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এত উন্নয়নের কথা বলছে সরকার, তাহলে দেশে অশান্তি কেন? তারাই নাকি আসলে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়। আরে উন্নয়ন ধুয়ে খাবে মানুষ, যদি ভাত খেতে না পারে?
শুক্রবার বেলা ১১টায় সিলেট সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি মাঠে মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রথান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আজ কোথাও আইনের শাসন নেই। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ যা ইচ্ছা তাই করছে। হামলা-মামলা, হত্যা ও গুম করে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশের মানুষ আরও জেগে উঠছে। তারা পালাবার পথ খুঁজে পাবে না।’
‘নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণরুপে ভেঙে দিয়েছে সরকার’- এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, গত দুটো নির্বাচন করেছে, আপনারা দেখেছেন, যারা একটিতে কোনো ভোটই হয় নাই, ১৫৪ জনকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করিয়ে তারা সরকার গঠন করেছিল। ভোটকেন্দ্রগুলোতে কুকুর বসেছিল। আমাদের শফিউল আলম প্রধান সাহেব, জাগপার প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তিনি খুব সুন্দর একটা কথা বলেছিলেন। এই নির্বাচনকে নাম দেওয়া যেতে পারে ‘কুত্তা মার্কা নির্বাচন’। ২০১৮ এর যে নির্বাচন, সে নির্বাচনে আগের রাতেই তারা সব ভোট দিয়ে চলে গেছে। আর ভোটের দিন যেটুকু বাকি ছিল, সেটুকু করে, কাউকে কাছেও ভিড়তে দেয়নি। তার আগে পুলিশকে ব্যবহার করে তারা এমন একটা অবস্থার তৈরি করেছিল, আমাদের নেতা-কর্মীদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার মতো অবস্থাও ছিল না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা সংবিধান মানে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘১৯৭২ সালে এ দেশের মানুষ যে সংবিধান রচনা করেছিলেন সেটাকে বারবার কাটাছেঁড়া করে অকার্যকর একটা সংবিধান করেছে। তারা যখনই সুযোগ পেয়েছে সংবিধানকে ধ্বংস করেছে। সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন হবে। কিন্তু তারা সংবিধানই মানে না। রাতের আঁধারে ভোট দিয়ে আবার ক্ষমতায় আসার পাঁয়তারা করছে।
দেশের অর্থনীতির অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিদেশে টাকা পাচার করছে। ব্যাংক খালি করছে। আবার পদ্মাসেতু, উড়াল সেতু, মেট্রোরেলসহ নানা বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে অতিরিক্ত টাকা খরচ করছে। আমাদের সময় পদ্মাসেতুর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকা। তারা ৩০ কোটি টাকায় সেতু করেছে। ভারতের কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে দেড় লাখ কোটি টাকার লোকসান দিচ্ছে। অথচ দেশে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। মানুষ খেতে পারছে না।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম এ জাহিদ, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, এনামুল হক চৌধুরী ও তাহসীনা রুশদীর লুনা, সিলেট সিটি মেয়র ও বিএনপির নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল গাফফার, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।