The news is by your side.

এডিসি হারুনের নানা বাবর আলী সানা রাজাকার!

পুলিশে চাকরি করে দলবাজি করার কোনো সুযোগ নেই:  আইজিপি

0 166

 

এডিসি হারুন অর রশিদ। তার নানা বাবর আলী সানা একজন মুসলিম লীগার ও সক্রিয় জামায়াত নেতা ছিলেন। রাজাকারের যে তালিকা সেখানেও রয়েছে তার নাম।

শুধু হারুন নয়, পুলিশ ও প্রশাসনে এমন অনুপ্রবেশকারী অনেকেই আছে। খোদ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়েছেন।

প্রয়াত সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী একাধিকবার অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে সতর্ক করে অনেক কলামও লিখেছেন। এই ধরনের অনুপ্রবেশকারীরা প্রথমে বিরোধীদের ওপর চড়াও হয়ে সরকারের আস্থাভাজন হওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর নিজেদের আখের গুছিয়ে দানব হয়ে খোদ সরকারকে বিপদে ফেলে। এরা সরকারের জন্য বিপজ্জনক।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘এই ধরনের অনুপ্রবেশকারীরা অতি দলবাজ হয়ে নিজেদের স্বার্থে কাজ করে। আপনি আগে যে মতাদর্শেই থাকেন না কেন, পুলিশের চাকরিতে প্রবেশ করলে শপথ অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করতে হবে।

একটা স্বাধীন রাষ্ট্রে প্রশাসনে থেকে দলবাজির কোনো সুযোগ নেই। অনেকেই দলবাজি করে ভালো পোস্টিং নেওয়ার চেষ্টা করেন। মোহাম্মদ নাসিম যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন এক জন ডিসি (অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে অবসর নিয়েছেন) গিয়ে তার কাছে নিজের ছাত্রলীগ করার পরিচয় দিয়েছিলেন। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে বলেছিলেন, আগে কী রাজনীতি করেছেন সেটা আপনার কাছে শুনতে চাই না। আমরা যারা রাজনীতি করি সেটা আমরাই বুঝব। আপনি নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করুন। দায়িত্বশীলরা যদি তাদের এই ধরনের বার্তা দেন তাহলে প্রশাসনে দলবাজির প্রবণতা কমে যাবে। এই ধরনের কর্মকর্তা সরকার ও প্রশাসনের জন্য বিপজ্জনক।’

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পেটানোর অভিযোগে অবশেষে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পুলিশে চাকরি করে দলবাজি করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি পেশাবহির্ভূত কাজের সঙ্গে যুক্ত হন তাহলে তিনি যে-ই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শনিবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাবির ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমকে শাহবাগ থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। নারীঘটিত একটি ঘটনার জেরে এ ঘটনা ঘটে। এরপর শাহবাগ থানায় নিয়ে তাদের নির্যাতনের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদসহ অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে না ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিভাগীয় তদন্ত ও ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখতে চায় সংগঠনটি।

ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদকসহ ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাত্ করে। সরাসরি এক জন ভুক্তভোগীও ছিলেন। বৈঠক শেষে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে তাতে বাংলাদেশের সব শ্রেণির নেতাকর্মীর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে যেন আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হয় সেজন্য আমরা রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছি।

বৈঠক শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনার ছাত্রলীগকে জানান, বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত পেশাদার একটি সংস্থা। ব্যক্তির দায় বাংলাদেশ পুলিশ বহন করবে না। এটি একদম পরিষ্কার কথা। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে ঘটনাটি যখন সবার নজরে আসে তখন তাৎক্ষনিকভাবে কমিশনার স্যার তাকে (এডিসি হারুন) রমনা থেকে সরিয়েছেন। পরে আইজিপি স্যার ডিএমপি থেকে তাকে এপিবিএনে বদলি করেন। এছাড়া ডিএমপি একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে।’

ছাত্রলীগের দুই নেতাকে পেটানোর ঘটনায় অভিযুক্ত এডিসি হারুনের পরিবারের সবাই ‘বিএনপি-জামায়াত সমর্থক’ বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

রবিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, হারুনের বাবার নাম জামাল উদ্দিন গাজী। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের থানাঘাটা গ্রামে। হারুনের বাবা মাড়িয়ালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আশাশুনির ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জামাল উদ্দিন ও মাতা শেফালী বেগম উভয়ই জামায়াত-সমর্থক। নানা মৃত বাবর আলী সানা একজন মুসলিম লীগার ও সক্রিয় জামায়াত নেতা ছিলেন। মামা হুমায়ুন কবির ও মিলন বিএনপি সক্রিয় কর্মী। এছাড়া বাবা ও মায়ের পরিবারের সব সদস্য বিএনপি-জামায়াত-সমর্থক।

রাব্বানী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর জিয়া হল ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাকের রুমমেট ছিলেন (কক্ষ নং-৩১০) এবং তার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে জিয়া হলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তী সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহযোগী হিসেবে ছাত্রলীগ তকমা লাগান।’

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.