মাত্র তিন বছরে ঢাকাই সিনেমাকে বিস্মিত করেছিলেন, জনপ্রিয়তার নতুন মাপকাঠিতে পরিণত হয়েছিলেন সালমান শাহ। অথচ প্রায় ত্রিশ বছর ধরে তাকে নিয়ে সমান চর্চা, আলোচনা। মৃত্যুর পরও যে এত দীর্ঘ সময় জনপ্রিয়, দর্শকের আগ্রহ-আলোচনাজুড়ে থাকা যায়, সেটার অনন্য উদাহরণ তিনি, সালমান শাহ। আজ তার চলে যাওয়ার দিন। ১৯৯৬ সালের এই দিনে রহস্যমৃত্যুকে আলিঙ্গন করে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে।
অপমৃত্যু নাকি হত্যাকাণ্ড, এখনো রয়েছে ধোঁয়াশা। তিনি আত্মহত্যা করেছেন- এই মর্মে কয়েকবার তদন্ত সংস্থা তাদের প্রতিবেদনও দাখিল করেছে আদালতে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি নায়কের পরিবার কিংবা ভক্তরা। কারণ সেসব প্রতিবেদনে বরাবরই বলা হয়েছে, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।
সালমান শাহর জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, সিলেটের দড়িয়াপাড়ায়। তার পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। সিনেমার জন্যই তিনি সালমান শাহ নামটি ধারণ করেছিলেন।
সুদর্শন চেহারা আর মনে অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে শোবিজে আসেন সালমান শাহ। শুরুটা হয় ১৯৮৫ সালে বিটিভির নাটক ‘আকাশ ছোঁয়া’ দিয়ে। এরপর বেশ কয়েকটি খণ্ড ও ধারাবাহিক নাটকে তাকে দেখা গেছে।
সিনেমায় সালমান শাহর আত্মপ্রকাশ ১৯৯৩ সালে, সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’দিয়ে। এটি ১৯৮৮ সালের হিন্দি সিনেমা ‘কায়ামাত সে কায়ামাত তাক’র অফিসিয়াল রিমেক। প্রথম ছবিতেই সাফল্য পান সালমান শাহ, রাতারাতি হয়ে ওঠেন তারকা। একের পর এক সিনেমা আসে তার ঝুলিতে।
পরবর্তী তিন বছর চুটিয়ে কাজ করেছেন সালমান শাহ; নির্দিষ্ট করে বললে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। এর অধিকাংশই হয়েছিল সফল। এর মূলে ছিল তার নজরকাড়া ফ্যাশন, সুদর্শন চেহারা আর দক্ষ অভিনয়। ফলে নতুন প্রজন্মের অনেক নায়কই তাকে আদর্শ মেনে অনুসরণ-অনুকরণ করেন।
সালমান শাহ অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিনেমা হলো, ‘তুমি আমার’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘বিচার হবে’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘সুজন সখি’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বুকের ভেতর আগুন’ ইত্যাদি।