The news is by your side.

একুয়েডরের আশ্রয় হারাচ্ছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

0 680

 

 

লন্ডনে একুয়েডরের দূতাবাস থেকে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে ‘যে কোনো সময় বের করে দেওয়া হবে’ বলে টুইটারে জানিয়েছে উইকিলিকস।

অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করতে একুয়েডরের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের একটি চুক্তি হয়েছে বলে ওই টুইটে দাবি করা হয়।

শুক্রবারের ওই টুইটে বলা হয়,“একুয়েডরের একজন শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তা উইকিলিকসকে বলেছেন, আইএনএ পেপারস অফশোর স্ক্যান্ডেলকে অজুহাত বানিয়ে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যে কোনো সময় দূতাবাস থেকে বের করে দেওয়া হবে।”

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ গত সাত বছর ধরে লন্ডনে একুয়েডরের দূতাবাসে অবস্থান করছেন।

এদিকে, নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়,অ্যাসাঞ্জকে ধরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে একুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ঋণ মওকুফ চেয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট মোরেনো গত মঙ্গলবার স্থানীয় একটি রেডিওতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, অ্যাসাঞ্জ লন্ডনে তাদের দূতাবাসে অবস্থানের সময় ‘বারবার তাকে আশ্রয় দানের শর্ত লঙ্ঘন করেছন’।

তিনি বলেন, “কারো ব্যক্তিগত একাউন্ট হ্যাক বা ফোনে আড়ি পাতার অধিকার অ্যাসাঞ্জের নেই। অন্য দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অধিকারও নেই তার, বিশেষ করে ওইসব দেশের যাদের সঙ্গে একুয়েডরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।”

সম্প্রতি মোরেনো ও তার পরিবারের একটি ব্যক্তিগত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কয়েক বছর আগে মোরেনো পরিবার নিয়ে যখন ইউরোপে বসবাস করতেন ছবিটি তখন তোলা।

একুয়েডর সরকারের ‘বিশ্বাস’ উইকিলিকসই ওই ছবি চুরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছে।

মোরেনো বলেন, “আমরা অ্যাসাঞ্জ ও তার আইনজীবীদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলাম তিনি অনেকবার তা লঙ্ঘন করেছেন। এমন নয় যে তিনি স্বাধীনভাবে কথা বলতে ও মত প্রকাশ করতে পারবেন না। কিন্তু তিনি মিথ্যাচার বা কারো ব্যক্তিগত একাউন্ট বা ফোন হ্যাক করতে পারেন না।”

অ্যাসাঞ্জকে বের করে দিতে তার সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা সে বিষয়ে মোরেনো কোনো মন্তব্য করেননি।

অ্যাসাঞ্জকে বের করে দেওয়া প্রসঙ্গে উইকিলিকস থেকে ইমেইলে এক বিবৃতিতে বলা হয়, উইকিলিকস মোরেনোর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় প্রতিশোধ নিতে অ্যাসাঞ্জকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।

“বিদেশে নিজের দুর্নীতির কেলেঙ্কারি ঢাকতে যদি প্রেসিডেন্ট মোরেনো একজন শরণার্থী প্রকাশকের সঙ্গে করা চুক্তি অবৈধভাবে বাতিল করে তবে ইতিহাস তাকে ক্ষমা করবে না।”

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।

যার মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধসম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরো ৪০ হাজার নথি ছিল। যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়।

সুইডেনে তার বিরুদ্ধে হওয়ার ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে ২০১২ সালে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনের একুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।

যদিও পরে তার বিরুদ্ধে হওয়া ধর্ষণ মামলা খারিজ হয়ে যায়। তবে অ্যাসাঞ্জের আশঙ্কা বিচারের মুখোমুখি করতে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে বহিঃসমর্পণ করা হতে পারে। সেখানে উইকিলিকসের তথ্য চুরি নিয়ে ফেডারেল আদালতে মামলা চলছে।

একুয়েডর সরকার শুরু থেকেই অ্যাসাঞ্জকে দৃঢ় সমর্থন দিয়ে গেছে। এমনকি ২০১৮ সালের শুরুর দিকে তাকে একুয়েডরের নাগরিকত্বও দেওয়া হয়ছে।

২০১৭ সালে লেনিন মোরেনো একুয়েডরের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলাতে থাকে, মোরেনো ক্ষমতা গ্রহণের পরপর অ্যাসাঞ্জকে ‘হ্যাকার’ বলেছিলেন।

২০১৮ সালের মার্চে দূতাবাসের ভেতর অ্যাসাঞ্জের বেশ কিছু সুবিধা রহিত করে একুয়েডর। কেটে দেয়া হয় তার ইন্টারনেট সংযোগ। তাকে তার চিকিৎসা খরচ এবং পোষা বেড়ালের জন্য পরিচ্ছন্নতার খরচ দিতেও বলা হয়।

যার বিরুদ্ধে তিনি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্ত হয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন। উভয় আদালত তার বিরুদ্ধে রায় দেয়।

সম্প্রতি অ্যাসাঞ্জ অভিযোগ করে বলেছিলেন, একুয়েডর তাকে আর আশ্রয় দিতে চাইছে না। এছাড়া দূতাবাসে তার সঙ্গে কাউকে দেখা করার অনুমতি না দিয়ে এবং তার উপর গোয়েন্দাগিরি করে তাকে চাপে ফেলার চেষ্টাও করা হচ্ছে।

জবাবে একুয়েডর সরকার বলেছিল, তারা অ্যাসাঞ্জের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন মেনেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

“কিন্তু তার যে পরিস্থিতি তা অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে দেওয়া যায় না।”

অ্যাসাঞ্জকে একুয়েডর দূতাবাস থেকে বের করে দেওয়া প্রসঙ্গে কথা বলতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে তার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.