নির্মলেন্দু গুণ
উৎসমুখ
আমার প্রথম প্রেম, প্রথম পক্ষ, মানে আমার প্রথম স্ত্রী হলেন আমার ঠাকুরমা– কামিনীসুন্দরী।
খুব ছোটবেলায়, যখন আমার মধ্যে কাম জাগ্রত হতে শুরু করেছে মাত্র, তখন আমি আমার ঐ পরমাসুন্দরী ঠাকুরমা কামিনীসুন্দরীর প্রেমে পড়েছিলাম।
অসম প্রেমই বলা যেতে পারে, যদিও প্রেমের বেলায় অসম ও সসমর মধ্যে আমি কোনো তফাৎ বুঝি না। আমি ভাবি– মানবসমাজ থেকে উত্থিত সকল প্রেমই সসম। সকল প্রেমই সঙ্গত।
আমি যে সময়ের কথা বলছি, তখন মহিলাদের ব্লাউজ ও পেটিকোট পরার চল ছিলো না। তার সুফল আমি যথাসম্ভব ভোগ করেছি।
আমার প্রয়াত ঠাকুরদার তরুণী ভার্যা কামিনীসুন্দরী বৈধব্যপালনার্থে ধবধবে সাদা থান কাপড় পড়তেন।
তাঁর ফর্শা মসৃণ ত্বকের জন্য সাদা থান শাড়িতে তাকে খুবই সুন্দর লাগতো। সধবাদের চেয়ে বিধবাদেরই আমার বেশি ভালো লাগতো, বেশি আপন বলে মনে হতো।
ঠাকুরদার প্রয়াণে আমি কষ্ট পেলেও ঠাকুরমার বিধবা হওয়ার কারণে আমি মনে-মনে খুশিই হয়েছিলাম।
ব্লাউজের আড়াল না থাকার কারণে আমার ঠাকুরমার অশিথিল স্তনদ্বয় সাদা থান শাড়ির শাসন অমান্য করে প্রায়ই ডানে বায়ে বেরিয়ে আসতো। তখন বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে আমি তাঁর নিটেল দুটো স্তনের অংশবিশেষ দেখতে পেতাম।
মনে হয় এক পর্যায়ে আমার ঠাকুরমা বিষয়টা বুঝে গিয়েছিলেন। তাই, আমি তাঁর কাছে গেলে তিনি তার সাদা থান দিয়ে বুকটা এমনভাবে ঢেকে ফেলতেন– যে তার স্তনের আকৃতিটা বুঝতে পারলেও, আমার পক্ষে তার পূর্ণচন্দ্র দর্শনের সুযোগ আর হতো না।
২
আমি আমার ঠাকুরদাদা, ঠাকুরমা ও আমার বাবাকে নিয়ে এমন একটা মজার গল্প ফেঁদেছি–। আশা করি আমার এই আত্মজৈবনিক গল্পটি আপনাদের ভালোই লাগবে।
মূলগল্প
গল্পের এই অংশটা স্মৃতিনির্ভর। পূর্বজন্মের আবছা স্মৃতির মতো মনে হয়। তাই কিছু তথ্যগত ভুলও হয়ে যেতে পারে।
গল্পটিকে সময় দিয়ে বিচার না করাটাই সঙ্গত হবে।
এখানে গল্পটা সময়ের অধীন নয়, সময়কেই গল্পের অধীন বলে ভাবতে হবে।
আমার আবছা মনে পড়ে- সদ্যজাগ্রত যৌবনে আমার ঠাকুরদাদার সুন্দরী তরুণী ভার্যা কামিনী সুন্দরীর রূপে মুগ্ধ হয়ে আমি তাঁর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে ( যদিও বিবাহের সঙ্গে বন্ধন শব্দটিকে সংযুক্ত করার পক্ষে আমি নই) আবদ্ধ হই। ফলে আমার ঠাকুরমার দুইজন স্বামীর সৃষ্টি হয়– বিঘোষিত রামসুন্দর ও অঘোষিত আমি।
কামিনী সুন্দরী তাঁর এই দুই স্বামীর সঙ্গেই দ্রৌপদীর মতো পালাক্রমে মিলিত হতেন।
নির্ভয় মিলনের ফলে যা হওয়ার কথা, তাই হয়।
অচিরেই কামিনীসুন্দরী গর্ভবতী হন এবং তিনি একটি ফুটফুটে পুত্রসন্তান প্রসব করেন–।
দুই স্বামীই তখন কামিনীসুন্দরীর নবজাত পুত্রের পিতৃত্ব দাবী করলে কামিনীসুন্দরী দু’জনের পিতৃত্বের দাবীই সানন্দে মেনে নেন।
ফলে ঐ সুখী-নবজাতকটি এক মাতা ও দুই পিতার একমাত্র পুত্রসন্তানে পরিণত হয়।
এই গল্পটি সম্পর্কে আমার নিরপেক্ষ বিবেচনা হলো এই যে, এই রোমান্টিক গল্পটি আমার ঠাকুরদাদা রামসুন্দর গুণ ও আমার ঠাকুরমা কামিনীসুন্দরীর সামাজিকভাবে অনুমোদিত যৌনজীবনে অননুমেদিত অংশগ্রহণের কামতৃষ্ণা বা পিতৃপ্রেম বা পুত্রাক্ঙ্ক্ষা থেকে জাগ্রত।