বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু করতে গিয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপানো হয়েছে। অপবাদ দেওয়া হয়েছে। একটি ব্যাংকের এমডি থাকার জন্য চাপ দিতো। একটি বড় দেশ এ নিয়ে চাপ দিয়েছে, তাকে এমডি পদে না রাখলে পদ্মা সেতুর ঋণ দেবে না।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ছাত্রসমাবেশে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ড. ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি আইনে আছে ৬০ বছর পর্যন্ত এমডি থাকতে পারবে। এর বেশি হলে থাকতে পারবে না। তারপরও বেআইনিভাবে ১০ বছর চালিয়ে আবারও সেখানে থাকতে হবে, সেই লোভে বারবার আমাদের ওপর চাপ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে সেই ভদ্রলোক মামলাও করেছিল। কিন্তু আদালত তো তার বয়স কমাতে পারে না। সে মামলায় হেরে যায়। তারপর তার বিদেশি বন্ধু দ্বারা…এটা কিন্তু ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের বোর্ডে হয়নি। হিলারি ক্লিনটন নিজে অর্ডার দিয়ে তখন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের যিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাকে দিয়ে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তখন বলেছিলাম নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করব, কারও কাছে হাত পেতে না। আমরা সেটা করেছি। সেটা করে বিশ্বকে দেখিয়েছি। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা ভাষণ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এই বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা কিন্তু সেই জাতি। আমাদের দাবায়ে রাখতে পারে নাই।’
নিজ এলাকায় পেনশন স্কিম নিয়ে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করতেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দায়িত্ব দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনকের এগিয়ে আনা বাংলাদেশকে তার হত্যার মধ্যদিয়ে আবার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এসে আবার সে যায়গা থেকে বাংলাদেশকে তুলে এনেছি। স্বাধীনতা যেন ব্যর্থ না হয়। স্বাধীনতা সুফল যাতে প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়, সে ব্যবস্থা আমরা নিই।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য, এ বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করবো। কবির ভাষায়, ‘এই বিশ্বকে বাসযোগ্য করে যাবো আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার অঙ্গীকার।’ আমার কোনো ভয় নেই। বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় কেউ যাতে নস্যাৎ করতে না পারে, তোমাদের (ছাত্রলীগ) অতন্দ্র প্রহরীর মতো ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি তোমাদের বলবো, শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি, ছাত্রলীগের মূলনীতি।
বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রথম প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্ব। সঠিক নেতৃত্ব ছাড়া রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।’ আমি আশা করি, ছাত্রলীগের নেতারা নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলবে।
বিএনপির আমলের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপি এসে হাওয়া ভবন খুলে খাওয়া শুরু করেছিল। ওরা ভোট করতে আসে না। ভোট পায় না। ওরা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস করে। মানুষের ঘরবাড়ি কেড়ে নেয়। লুটেরা সন্ত্রাসে বিশ্বাসী, এরা মানুষের কল্যাণে বিশ্বাস করে না। ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা করে আমাদের ২৪জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে হেয়প্রতিপন্ন করেছে। ভোট তাদের কথা না। তারা বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়। বিএনপি এদেশের কল্যাণ চাইতে পারে না, চায় না।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় এতে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতারা অংশ নেন।