ইরানে নৈতিক পুলিশের কাছে গ্রেপ্তারের পর মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ইরানের ৮০টি শহরে। বিক্ষোভ দমাতে কঠোর অবস্থানে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ পর্যন্ত ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইরানের মানবাধিকার সংগঠন (আইএইচআর) এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। যদিও দেশটির সরকারি তথ্য মতে, বিক্ষোভে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন।
অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন বলছে, সরকারিভাবে ১৭ জন নিহতের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নিহতের প্রকৃত সংখ্যা তিন গুণ বেশি।
মানবাধিকার সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অন্ততপক্ষে ইরানের ৮০টি শহরে মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ। ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরানের রাজধানী তেহরানের জ্বলন্ত ছবি। সন্ধ্যা নামার পরই তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় জমায়েত হচ্ছে বিক্ষোভকারীরা।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনিকে হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে আটক করে দেশটির মোরালিটি পুলিশ। তারপর তাকে পুলিশের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়। গত শুক্রবার তিন দিন কোমায় থাকার পরে মৃত্যুবরণ করেন মাহশা আমিনি।
পুলিশের দাবি, মাহশা আমিনি হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেছেন। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, পুলিশের ভ্যানে তোলার সময় মাহশা আমিনিকে নির্যাতন করা হয়। একারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে দেশটির ৮০টি শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হচ্ছে। বিক্ষোভ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাদের গুলিতে প্রতিদিন হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিক্ষোভের মধ্যেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর হিজাব ছাড়া ফেসবুকে ভিডিও আপলোডের অভিযোগে দেশটির মানবাধিকারকর্মী মেলিকা কারাগোজলুকে পৌনে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপ্লব হওয়ার পর থেকে নারীদের জন্য হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক। দেশটির মোরাল পুলিশ এই ড্রেস কোড কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করে।