ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে নারীর পোশাক নিয়ে কঠোর রক্ষণশীলতার রাষ্ট্রীয় নীতির বিরুদ্ধে আরও সরব হচ্ছেন নারীরা। গত বছর পোশাকবিধি অনুসারে মাথার চুল না ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজ মাহশা আমিনি নামের তরুণীর মৃত্যুর পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন দেশটির নারীরা। এখন তারা চুল খুলে দিয়ে ইরানের হিজাব আইনের বিরোধিতা করছেন।
গত বছরে ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর নারী অধিকারের বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়। নারীরা নিজেদের অধিকার রক্ষায় রাস্তায় নেমে আসেন। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নেন। তবে বিক্ষোভকারী নারী হলেও কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি। কারণে-অকারণে আটক করা হয়। শাস্তির মুখোমুখি করা হয় তাদের।
নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লব হয়। তবে কয়েক দশকেও দেশটি ধর্মীয় নেতাদের তৈরি পোশাকনীতি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আইন অনুযায়ী দেশটির নারীদের মাথা ও চুল ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক। এমন লম্বা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে, যাতে শরীরের গঠন বোঝা না যায়। তবে ইরানে বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণির অনেক নারী আঁটসাঁট পোশাক পরেন। তারা ঊরু পর্যন্ত কোট পরেন। পাশাপাশি এমন উজ্জ্বল রঙের স্কার্ফ পরেন, যাতে মাথার চুল বেরিয়ে থাকে। আর গত বছর মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে নারীরা তাদের চুল খুলে দিচ্ছেন এবং হিজাব আইন বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন।
ইরানের এক নারী প্রকৌশলী জেইনাব কাজেমপুর। তিনি তেহরানের একটি ইভেন্টে মঞ্চে হাঁটছেন, টাইট প্যান্ট এবং একটি শার্ট পরা এবং এক হাতে একটি মাইক্রোফোন ধরা। তার লম্বা বাদামী চুল, পনিটেলে বাঁধা, ইরানের কঠোর হিজাব আইনের প্রতিবাদে চুলও খোলা রেখেছেন তিনি।
তিনি বলেন, হিজাবের নিয়ম সমর্থন করার জন্য বর্তমানে ক্ষমতাসীন দলটির নিন্দা করেছিলেন, এবং তারপরে তিনি তার ঘাড় থেকে একটি স্কার্ফ সরিয়ে এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির একটি বিশাল ছবির নিচে মেঝেতে ফেলে দিয়ে মিছিল করেছিলেন।
তার মতো আরও অনেক নারী এখন চুল খুলে, টাইট পোশাক পরে ইরানের রাস্তায় চলাফেরা করছেন। আর দেশটির রক্ষণশীলতার রাষ্ট্রীয় নীতি তুলে দিতে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।