পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ , তিনি তৃতীয় বিয়েটি ইসলামি মতে করেননি। সেই সংক্রান্ত মামলায় এ বার ইমরান এবং তাঁর বর্তমান স্ত্রী বুশরা বিবিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিল পাকিস্তানের একটি আদালত। শুধু তাই নয়, ইমরানের তৃতীয় বিয়েকে ‘অবৈধ’ বলেও ঘোষণা করেছে আদালত।
বুশরা বিবির প্রাক্তন স্বামী খাওয়ার মানেকার অভিযোগ, ইসলামি মতে বিয়ে করেননি ইমরান। যে সমস্ত বিধি মেনে পুনরায় বিয়ে করতে হয়, সেই সবগুলিই নাকি লঙ্ঘন করেন ৭১ বছর বয়সি পাকিস্তানি রাজনীতিক। মানেকাই সস্ত্রীক ইমরানের বিরুদ্ধে মামলাটি রুজু করেছিলেন। বুশরা বিবির প্রাক্তন স্বামীর আরও অভিযোগ, বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার আগেই তাঁর তদানীন্তন স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর সম্পর্ক রেখেছিলেন ইমরান।
রায় ঘোষণার সময় আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন ইমরান এবং বুশরা। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, বিচারক সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ইমরান এবং বুশরাকে ৫ লক্ষ টাকা (পাকিস্তানি মুদ্রায়) জরিমানার নির্দেশও দিয়েছেন।
২০২২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত চারটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন ইমরান। বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে রয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয় পাকিস্তানের বিশেষ আদালত। তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ১৪ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয় ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবিকেও। আদালতের নির্দেশ ছিল, ইমরান বা তাঁর স্ত্রী, কেউই আগামী ১০ বছরের জন্য কোনও সরকারি পদে বসতে পারবেন না। পাশাপাশি, পাকিস্তানি মুদ্রায় তাঁদের প্রায় ৭৯ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। দেশের গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগে মঙ্গলবারই পাকিস্তানের ওই বিশেষ আদালত প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল। ওই মামলায় ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সহ সভাপতি শাহ মেহমুদ কুরেশিকেও ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারিত হন ইমরান। তার পরে ২০২৩ সালের ৫ অগস্ট তাঁকে কারাদণ্ড দেয় ইসলামাবাদ কোর্ট। তোষাখানা মামলায় তিন বছরের জেলের সাজা দেওয়া হয়েছিল ইমরানকে। গত ডিসেম্বরে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ইমরান এবং কুরেশিকে জামিন দিয়েছিল। তবে জামিন পেলেও তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্য মামলাগুলির জন্য জেলেই ছিলেন ইমরান।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। তার আগে পাকিস্তানের আদালত ইমরানের বিরুদ্ধে নতুন করে সাজা ঘোষণা করায় তাঁর দল আরও বিপাকে পড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে।