প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে কোনোভাবেই রাজনৈতিক সংকট প্রকট হবে না। সংকট ইভিএম নিয়ে নয়, সেটা আরও মোটাদাগের সংকট। রাজনৈতিক সমঝোতা মাধ্যমে ফয়সালা হলে সব ভোট ব্যালটে হবে।
বুধবার নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে ৩৯ নাগরিকের বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিবৃতি দেন দেশের ৩৯ নাগরিক। তাঁরা সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারে ইসির নেওয়া সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক হিসেবে আখ্যা দেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়াই নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ভোট গ্রহণে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘রাজনৈতিক সংকট হতে পারে—এটা আমি জানি না। ইভিএম নিয়ে যদি কোনো রাজনৈতিক সংকট হয়, তা মোকাবিলার ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা ইভিএম নিয়ে কোনো সংকট দেখছি না।…ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক সংকট প্রকট হবে না।’
২৩ আগস্ট এক বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। ভোটে এই যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্কের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এর আগে ইসির সংলাপে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ইভিএম নিয়ে সংশয় ও সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল নিজেও সংলাপে বলেছিলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএমে বিশ্বাস করছে না। কিন্তু সেটি শেষ পর্যন্ত খুব একটা আমলে নেয়নি ইসি। এর আগে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিল।
সিইসি বলেন, ‘আমরা বরং রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যে সংকটগুলো দেখছি, সে সংকট ইভিএম নিয়ে নয়, আরও মোটাদাগের সংকট। আমরা আশা করি, দোয়া করি, এ সংকটগুলো কেটে যাক। কেটে গিয়ে যদি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে ফয়সালা হয়, সব ভোট ব্যালটে হবে, শতভাগ সমঝোতায় হয়, অসুবিধা কী।
তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব, সব দল যখন নির্বাচনে আসছে, তাহলে সেটা ভালো উদ্যোগ।’
সিইসি ইভিএম নিয়ে বলেন, ‘আমাদের জন্য যেটা প্রয়োজন, ইভিএমে ভোট করলাম কি না, সেটা নয়; নির্বাচনটা সঠিক, অবাধ, নির্বিঘ্ন হলো কি না, সেটা। ইভিএমে হোক বা ব্যালটে হোক, সেটা হওয়া বড় কথা। কাজেই বড় ধরনের সংকট ওখানে নয়, আপনারও তা জানেন; ওই সংকট নিরসন হলে নির্বাচনটা সুন্দরভাবে উঠে আসবে।’