ইন্দোর টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই বাংলাদেশের ভাগ্যে ইনিংস ব্যবধানে হার লেখা হয়ে যায়। হাসি-খুশি চেহারার বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও যেন হার মেনে নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন। দ্বিতীয় টেস্ট নিয়ে কথা বলেন তিনি। পরিবর্তনের আভাস দেন। তৃতীয় দিনের অপেক্ষা ছিল ম্যাচটা হারতে মুমিনুলরা কত সময় নেয় শুধু সেইটা দেখার। দুই টেস্টের সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রথম দিন দুই সেশনেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় সেশন ছুঁতে পারা এবং দুইশ’ রানের গন্ডি ছাড়ানোই যেন প্রাপ্তি বাংলাদেশের। কিন্তু তাতে হারের ব্যবধান খুব একটা কমেনি। ইন্দোর টেস্টের তৃতীয় দিনেই ইনিংস ও ১৩০ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। মুমিনুলরা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করেছেন লজ্জা দিয়ে।
ইন্দোরে লাল মাটি দিয়ে বানানো পেস সহায়ক উইকেটে টস জিতে ব্যাট নিয়ে বড় ভুল করে বসে বাংলাদেশ। তার খেসারত দিয়ে স্বাগতিক ভারতের পেস ত্রয়ী মোহাম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা এবং উমেশ যাদবের ছোবল মারা বলের সামনে প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নামা ভারত আবার ব্যাটিংয়ে রানের পাহাড় করে বাংলাদেশ দলকে ক্লান্ত করে ছাড়ে। দ্বিতীয় দিন শেষে ভারত ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ৪৯৩ রান। প্রথম ইনিংস থেকে ৩৪৩ রানের বিশাল লিড নেয়। তারপরও ইনিংস ঘোষণা করবে কি-না সেই প্রশ্ন জিউয়ে রেখে দ্বিতীয় দিন শেষ করে ভারত।
তৃতীয় দিনের শুরুতেই বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। সকালে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেই দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। সাত ওভারের মধ্যেই ফিরে যান দুই ওপেনার। তারা দু’জন প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ৬ করে রান করেন। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে ৬৯.২ ওভারে ব্যাট করে ২১৩ রানে অলআউট হয় রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন উইকেটকিপিং ছেড়ে ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দেওয়া মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসেও তিনি দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন। তাকে সঙ্গ দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদি মিরাজ খেলেন ৩৮ রানের ইনিংস। দু’জনে মিলে সপ্তম উইকেটে যোগ করেন ৫৯ রান। তার আগে ঝড়ো শুরু করা লিটন দাস ৩৫ রান করে ফিরে যান। মাহমুদুল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। এছাড়া মোহাম্মদ মিঠুন ফিরে যান ১৮ রানে।
কাল ভারতের হয়ে ২৪৩ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল। অজিঙ্কা রাহানের ব্যাট থেকে এসেছে ৮৬ রান। ৭৬ বলে ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। শেষ দিকে ১০ বলে অপরাজিত ২৫ রান করে ঝড় তোলেন উমেশ যাদব।
বোলিংয়ে আবার ভারতের পেস বলে ধসে গেছে বাংলাদেশ। ভারতের উইকেট সাধারণত স্পিন সহায়ক হয়। কিন্তু ইন্দোরের হলকার স্টেডিয়ামের উইকেট কিছুটা আলাদা। দুই ইনিংসে ভারতের তিন পেসার নিয়েছেন ১৪ উইকেট। আর স্পিনার রবিশচন্দন অশ্বিন নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে চারটিসহ দুই ইনিংসে সাত উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ শামি। এছাড়া উমেশ যাদব দুই ইনিংসে চার উইকেট এবং ইশান্ত শর্মা নিয়েছেন তিন উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট নেন পেসার আবু জায়েদ। প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট হয় সফরকারী দল।