২০১৪ সালে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করে টাইব্রেকারে ডাচদের ৪-৩ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো আর্জেন্টিনা। বাঁচিয়েছে ল্যাতিনের স্বপ্ন।
প্রথমার্ধের ৩৫ মিনিটে নাহুয়েল মলিনার গোলে ১-০ গোলে লিড নিয়েছিল আলবিসেলেস্তেরা। লিড ২-০ করেছিলেন মেসি ৭৫ মিনিটে। গোল করেছিলেন পেনাল্টি থেকে।
এরপরই কামব্যাকের গল্প লেখে ডাচরা। কে জানত ৮২ মিনিট পর্যন্ত আর্জেন্টিনা ২-০ গোলে গিয়ে থাকা ম্যাচে নেদারল্যান্ডস অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়াবে! বাকি সময়ে ২ গোল শোধ করে ডাচটা ঠিকই অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত নিয়ে গেল ম্যাচটা। তারপর টাইব্রেকার।
সেখানেও কত নাটক! নেদারল্যান্ডসের দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে শুরুতেই আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। তৃতীয় শটে গোল পায় ডাচরা। আর্জেন্টিনা গোল পায় প্রথম তিন শটেই। কিন্তু এনজো ফার্নান্দেজ চতুর্থ শটটা বাইরে মারায় আবার জমে উঠে টাইব্রেকার। ডাচরা চতুর্থ ও পঞ্চম দুটি শটেই গোল করে। ফলে লাওতারো মার্তিনেজের নেওয়া পঞ্চম শটটা হয়ে উঠে ম্যাচের ভাগ্য-নির্ধারক। এবার আর ভুল করেননি লাওতারো। তাঁর শট নেদারল্যান্ডের জালে যেতেই উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন মেসিরা। ৪-৩ ব্যবধানে জিতে আর্জেন্টিনা উঠে যায় সেমিফাইনালে। যেখানে মেসিদের প্রতিপক্ষ আগের ম্যাচে ব্রাজিলকে হারানো ক্রোয়েশিয়া।
অথচ ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের বেশিরভাগটা আর্জেন্টিনাই এগিয়ে ছিল। আর সেটা লিওনেল মেসির কল্যানে। মাঝমাঠ থেকে বল একাই টেনে নিয়ে যান মেসি। ডি বাইরে বাইরে থেকে তিন ডিফেন্ডারের পায়ের মাঝ দিয়ে দর্শনীয় এক পাস দিলে মলিনা সেটিকে কোন রকম কার্পণ্য না করে গোলে পরিণত করেন।
এক গোলে এগিয়ে দুর্বার খেলতে থাকে স্কালোনির দল। ৪১ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিলেন মেসিও। কিন্তু ডিবক্সের ভেতর থেকে মেসির ডান পায়ের শট সোজা চলে যায় গোলরক্ষকের হাতে। শেষের দিকে ডাচরা গোলের চেষ্টা করলেও আর গোল পায়নি তারা। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণের ধার বাড়ায় ডাচরা। ৬৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির বা পায়ের বুলেট গতির শট গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়।
৭২ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর আকুনাকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। স্পট কিক থেকে পেনাল্টিতে গোল করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। এবারের বিশ্বকাপে এটি তার ৪র্থ গোল এবং সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে এটি তার ১০ম গোল।
দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও আক্রমণের ধার কমায়নি নেদারল্যান্ডস। ৮৪ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণ থেকে ডাচদের হয়ে হেডে গোল করেন বদল হিসেবে নামা উইঘোর্স্ট।
এক গোল শোধ দিয়ে আরও গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে ডাচরা৷ ৮৬ মিনিটে উইঘোর্স্ট বা পায়ের শট জাল ঘেষে বের হয়ে যায়। ম্যাচের শেষ দিকে যেন নাটকের প্লট নতুন করে লেখে নেদারল্যান্ডস।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল হতে আর মাত্র ১ মিনিট দূরে আর্জেন্টিনা। এমন সময়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক অয়ায় নেদারল্যান্ডস। দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি কিক থেকে গোল করব ডাচদের ঐতিহাসিকভাবে ম্যাচে ২-২ গোলে সমতায় ফেরান উইঘোর্স্ট। ম্যাচ গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে।