ইতালির মিলানে লাস্যময়ী ‘ন্যুড’ মডেল ক্যারল মাল্টেসি (২৬)-কে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করার অভিযোগ উঠল প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে। পুলিশ ইতিমধ্যেই ক্যারলের প্রাক্তন প্রেমিক ডেভিড ফন্টানাকে গ্রেফতার করেছে।
ক্যারল একটি ওয়েবসাইটে নিজের খোলামেলা ভিডিয়ো পোস্ট করে আয় করতেন। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি ক্যারলের গুণমুগ্ধ দর্শকেরা অধীর আগ্রহে তাঁর অনলাইন আসার অপেক্ষা করছিলেন।
ক্যারল অনলাইনে এলেন। কিন্তু তাঁকে দেখে হতবাক দর্শকেরা। কারণ দর্শকেরা দেখলেন, ক্যারলের হাত-পা পিছমোড়া করে বাধা। মুখেও শক্ত করে বাধা রয়েছে টেপ। মাথার উপর রাখা রয়েছে ব্যাগ।
আর ক্যারলের ঠিক পিছনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ডেভিড। পুরো ঘটনা নিজের ফোনে রেকর্ড করছিলেন। কিছু ক্ষণ পরই ডেভিড দর্শকদের জন্য ভিডিয়ো বন্ধ করে দেন।
সংবাদমাধ্যম ‘ইল জিওর্নো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভিডিয়ো শুট করার পর ক্যারলকে হাতুড়ির বার বার আঘাতে খুন করেন ডেভিড।
ডেভিড আদালতে জানান, তিনিই ক্যারলকে একসঙ্গে ভিডিয়ো করার অনুরোধ করেন এবং অনেক টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
কথা ছিল দর্শকদের জন্য ওই দৃশ্য রোমাঞ্চকর করে তুলতে বাঁধা অবস্থায় ক্যারলের উরুতে এবং পেটে কয়েকটি টোকা দেওয়ার কথা ছিল ডেভিডের। কিন্তু তার বদলে হাতুড়ি নিয়ে ক্যারলের মাথায় আঘাত করতে শুরু করেন ডেভিড। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ক্যারলের। আদালতে বিচার চলাকালীন ডেভিড নিজেই এই কথা স্বীকার করেন।
আদালতে ডেভিড বলেন, ‘‘আঘাত করার সময় আমি ওর (ক্যারলের) মুখ দেখিনি, কারণ মুখ ঢাকা দিয়ে দিয়েছিলাম। ঢাকা তুলে বুঝতে পারি যে আমি ওকে মেরে ফেলেছি।’’
ডেভিড এ-ও স্বীকার করেন যে, তিনি একটি জাপানি ছুরি দিয়ে ক্যারলের গলা কেটে ফেলেন।
ডেভিড জানান, মৃত্যু নিশ্চিত করতেই তিনি ক্যারলের গলা কেটে ফেলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ওর ব্যথা দূর করতে চেয়েছিলাম।’’
তবে খুনের পর সঙ্গে সঙ্গেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন ডেভিড। তাই তিনি ক্যারলের মোবাইল ফোন থেকে তাঁর বর্তমান প্রেমিক সালভাতোরকে মেসেজ করেছিলেন।
ক্যারল বেঁচে আছেন এবং কেউ যাতে তাড়াতাড়ি তাঁর খোঁজ না করেন, সেই উদ্দেশ্যেই ডেভিড ওই মেসেজ করেছিলেন।
এর পর ক্যারলের দেহ টুকরো টুকরো করতে শুরু করেন ডেভিড।
ক্যারলের টুকরো করা দেহ ইতালির ব্রেসিয়ার কাছে বোর্নোতে ফেলে দিয়ে আসা হয়।
আদালতে ডেভিড বলেন, ‘‘ক্যারলের দেহ টুকরো টুকরো করতে একটি বৈদ্যুতিক করাত ব্যবহার করেছিলাম। দেহ টুকরো টুকরো করতে ৩ দিন সময় লেগেছিল।’’তবে আদালতে ডেভিডের দাবি, ক্যারলের খুন মোটেও পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। নিজের কর্মকাণ্ডে তিনি অনুতপ্ত বলেও ডেভিড জানান।
বলেন, ‘‘ক্যারলকে বাঁচিয়ে আনতে আমি নিজেই মরে যাব। আমি কিছুই পূর্বপরিকল্পনা থেকে করিনি। আমি নিজের ভুল শোধরাতে চাই। আর নিজের ভুল শোধরাতে আমি সারা জীবন জেলে থাকতে চাই।’’
ডেভিডের দাবি অনুযায়ী, খুন পূর্বপরিকল্পিত না হলেও সরকারি আইনজীবীর দাবি, ক্যারলকে যে ভাবে বেঁধে রাখা হয়েছিল, তাতে মনে হচ্ছে যে পুরোটাই পূর্বপরিকল্পিত। খুব ভেবেচিন্তে ঠান্ডা মাথায় এই খুন করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।