গাড়ির ইঞ্জিন তখনও চালু। দীর্ঘ ক্ষণ তা চালু থাকায় ফুরিয়ে গিয়েছিল জ্বালানি। জানলা-দরজাবন্ধ ওই গাড়ির ভিতরে মিলেছিল এক যুগলের অর্ধনগ্ন দেহ।
২০১৪ সালে আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় ওই যুগলের এ হেন মৃত্যুর ঘটনা আন্তর্জাতিক শিরোনামে উঠে এসেছিল।
ইঞ্জিন চালু করে গাড়ির ভিতরে কেথ পেটন এবং সেলিনা জনসন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, সঙ্গমের সময় বদ্ধ গাড়িতে বিষাক্ত কার্বন মনোঅক্সাইড ভরে উঠেছিল। তাতেই মৃত্যু হয় বছর চল্লিশের ওই যুগলের।
২০১৪ সালের গোড়ায় এক বৃহস্পতিবারের রাতই কিথদের জীবনের শেষ রাত ছিল। এমনই জানিয়েছিল পেনসিলভেনিয়ার ওল্ড লাইকোমিং শহরের পুলিশ। শুক্রবার দিন গড়িয়ে রাত নামলেও কিথের কোনও খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছিল না।
অ্যালেনউড এলাকায় ওই গ্যারাজটি কিথকে ভাড়া দিয়েছিলেন তাঁর ভাই। গ্যারাজের বন্ধ গাড়িতে তিনিই ওই গাড়িটি দেখেন। খবর যায় পুলিশের কাছে।
পরে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, ওই শুক্রবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ কিথ এবং তাঁর সঙ্গী সেলিনাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।
ওল্ড লাইকোমিং শহরের পুলিশ জানিয়েছিল, কিথ এবং সেলিনার দেহ উদ্ধারের সময় গাড়ির ইগনিশন চালু ছিল। ভিতরে পড়েছিলেন কিথ এবং তাঁর সঙ্গী সেলিনা। উইলিয়ামস্পোর্টের বাসিন্দা সেলিনার দেহে পোশাক বলতে প্রায় কিছুই ছিল না।
ব্লুমিংগ্রোভ রোডের গ্যারাজে ওই গাড়ি থেকে দু’জনের নিথর দেহ ছাড়াও থেকে উদ্ধার হয়েছিল মারিজুয়ানা এবং পেরাফেরনালিয়া নামে কিছু মাদক। সঙ্গমের আগে কি তাঁরা মাদকসেবন করেছিলেন? সে সম্পর্কে অবশ্য বিশেষ কিছু জানা যায়নি।
জোড়া দেহ উদ্ধারের পর সেগুলি নিয়মমাফিক ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছিল পুলিশ। কিথদের দেহের ময়নাতদন্ত করেছিলেন করোনার চার্লস কিসলিং (জুনিয়র)। তাঁর রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃত যুগলের রক্তেই অতিমাত্রায় কার্বন মনোঅক্সাইড মিলেছিল।
পারিপার্শ্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্তকারীদের অনুমান ছিল, গাড়ির মধ্যে সঙ্গমের জন্যই গ্যারাজে গাড়ি দাঁড় করিয়েছিলেন কিথ। সেখানে একটি কেরোসিন হিটারও জ্বলছিল। সব কিছু মিলিয়ে কার্বন মনোঅক্সাইড ভরে গি কিথদের মৃত্যুর মাসখানেক আগেই একই রকম মর্মান্তিক ঘটনার খবর জেনেছিল আমেরিকা। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে মেলিসা পেরেইরা (২৫) এবং হোর্জে রদরিগেজ়ের (২৪) দেহ মিলেছিল পেনসিলভেনিয়ার একটি গ্যারাজে।য়েছিল গাড়িতে।
পুলিশ জানিয়েছিল, ২৭ ডিসেম্বর নিজেদের বিবাহবার্ষিকী উদ্যাপন করতে পেনসিলভেনিয়ার একটি সরাইখানার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন বাড়ি থেকে বেরোনোর পর থেকে প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে তাঁদের খোঁজ মিলছিল না।
পুলিশের দাবি, সরাইখানার উদ্দেশে গাড়ি নিয়ে বেরোলেও সেখানে পা রাখেননি মেলিসারা। তল্লাশির পর মেলিসা এবং হোর্জের দেহ মেলে নিউ জার্সির ওয়েন গ্রামের একটি আবাসনের গ্যারাজ থেকে। সেখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে সঙ্গমে মেতে উঠতে চেয়েছিলেন তাঁরা।
১০ বাই ১২ ফুটের ওই গ্যারাজ থেকে দম্পতির দেহ উদ্ধার হওয়ার খবর পেয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে মেলিসার কাকা শাম বাক্কাস বলেছিলেন, ‘‘দু’জনেরই বয়স কম। নিশ্চয়ই নির্জনে কিছুটা সময় কাটাতে চেয়েছিল ওরা।’’