বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসাস বলেছেন, বিশ্বজুড়ে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। যদিও এই মুহূর্তে ইউরোপের পরিস্থিতি কিছুটা ভালোর দিকে। তবে মহামারির ছয় মাস পার হলেও এখনই লকডাউনসহ বিধিনিষেধ শিথিলের সময় আসেনি বলেও সতর্ক করেন তিনি।
চীনের উহানে গত ডিসেম্বরের শেষদিকে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস। ইতিমধ্যেই দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই মহামারি। আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ লাখ মানুষ, প্রাণ হারিয়েছেন চার লাখের বেশি। শুরুতে করোনা মহামারির কেন্দ্রস্থল ছিল পূর্ব এশিয়া, পরে ইউরোপ। এখন ছড়িয়েছে আমেরিকায়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার জেনেভায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দিয়ে ডব্লিউএইচও প্রধান গ্যাব্রিয়েসাস বলেন, ‘যদিও ইউরোপের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, তবে বিশ্বের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।’
আক্রান্তের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত ১০ দিনের নয়দিনই প্রতিদিন এক লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। রোববার শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজারেরও বেশি, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ।’
গ্যাব্রিয়েসাস বলেন, ‘রোববার শনাক্ত রোগীদের ৭৫ শতাংশই পাওয়া গেছে মাত্র ১০টি দেশে। এর মধ্যে আবার বেশিরভাগই ল্যাটিন আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ।’
এদিকে করোনার বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে জারি হওয়া লকডাউন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এরই মধ্যে শিথিল করতে শুরু করেছে অনেক দেশ। তবে এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে গ্যাব্রিয়েসাস বলেন, ‘যেসব দেশের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে সেখানে এখন সবচেয়ে বড় হুমকি আত্মতুষ্টি।
বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ এখনও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, ‘মহামারির ছয় মাসেরও বেশি সময় গেছে। তবে কোনো দেশের জন্য এখনও প্যাডেল থেকে পা তুলে নেওয়ার সময় আসেনি।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের জেরে চলা বিক্ষোভ থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গ্যাব্রিয়েসাস বিক্ষোভকারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি মেনে আন্দোলনে যাওয়ার আহ্বান জানান।