ন্যাটোর বৈঠকের প্রথম দিন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের আরো এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম প্রয়োজন। আইআরআইএস, হকস, প্যাট্রিয়টের মতো সিস্টেম প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রয়োজন ট্রান্সফরমার ও জেনারেটর।’
মঙ্গলবার ন্যাটোর বৈঠকেও সেই একই প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ জানান, রাশিয়া বুঝে গেছে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে তারা এই যুদ্ধ জিততে পারবে না। একের পর এক অঞ্চল তাদের হাতছাড়া হয়েছে। তাই এখন ইউক্রেনের বেসামরিক মানুষের উপর আক্রমণ শুরু হয়েছে। নষ্ট করা হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।
কুলেবা জানিয়েছেন, ট্রান্সফরমার ও জেনারেটরের সাহায্যে সমস্ত নাগরিকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র নষ্ট করা হলেও মানুষ যাতে আলো পান, হিটার চালাতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হবে। এই কারণেই ন্যাটোর কাছে ট্রান্সফরমার ও জেনারেটর দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
কুলেবা বলেন, ‘ট্রান্সফরমারের সাহায্যে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করব এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে রাশিয়ার রকেট ধ্বংস করবো, যাতে তারা আর আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস করতে না পারে।’
স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, প্রথম দিনের বৈঠকে ন্যাটোর দেশগুলো ইউক্রেনকে আরো বেশি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দিতে সম্মত হয়েছে। বস্তুত, এর আগে জার্মানির কাছে প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম চেয়েছিল ইউক্রেন। অত্যাধুনিক এই সিস্টেম ন্যাটোর অনুমোদন না নিয়ে জার্মানি ইউক্রেনকে দিতে পারবে না বলে জানিয়েছিল।
এদিনের বৈঠকে সে বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে ন্যাটোর সমস্ত দেশই একটি বিষয়ে সহমত হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ জয় করার মতো জায়গায় আর নেই। সে কারণেই তারা আবহাওয়াকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।
এদিকে আরো একটি প্রসঙ্গে এদিনের বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছে। ২০০৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ প্রথম বলেছিলেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত করা হোক। রাশিয়ার তীব্র আপত্তি থাকলেও ন্যাটোর প্রায় সব দেশই তাতে সম্মতি জানিয়েছিল। বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা দেয়া হয়নি।
এদিন স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে ফের আলোচনা হয়েছে। সকলেই সহমত হয়েছেন এ বিষয়ে। তবে এদিনও কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা স্থির করা হয়নি।