The news is by your side.

ইইউতে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি অব্যাহত রাখা হুমকির মুখে  

0 198

বাংলাদেশের মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে ইইউতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপি অব্যাহত রাখা হুমকির মুখে পড়েছে।

২১ নভেম্বর প্রকাশিত জিএসপি কর্মসূচির ওপর ইউরোপীয় কমিশনের এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।  দুর্বল উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ইইউতে পণ্য রপ্তানিতে সহায়তা করতে জিএসপি হচ্ছে ইইউর প্রধান বাণিজ্যনীতি।

মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, পরিবেশ, জলবায়ু ও সুশাসনের ওপর আন্তর্জাতিক মানকে সম্মান জানানোর শর্ত সাপেক্ষে জিএসপি সুবিধা দেওয়া হয়।  এ সুবিধার কারণেই বাংলাদেশের পণ্যের বড় রপ্তানি গন্তব্য হয়ে উঠেছে ইইউ। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির প্রায় ৪৫ শতাংশ গেছে ইইউভুক্ত ২৭ দেশে।

সাম্প্রতিক সময়ে জিএসপি সুবিধা পাওয়া তিন দেশ—বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়িয়েছে ইইউ। কারণ হিসেবে ইইউ বলছে, দেশগুলোতে মৌলিক মানবাধিকার ও শ্রম অধিকারের মানদণ্ডের প্রতি সম্মান দেখানোর ঘাটতির বিষয়টি জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও সুশীল সমাজের প্রতিবেদনে প্রমাণিত। ইইউ বলেছে, মানবাধিকার ও শ্রম অধিকারের প্রতি সম্মান জানাতে ব্যর্থ হলে সুবিধাভোগী দেশগুলো তাদের জিএসপি সুবিধা হারাতে পারে।

প্রসঙ্গত, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত মানবাধিকার নীতিগুলোর গুরুতর ও পদ্ধতিগত লঙ্ঘনের কারণে ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারিতে কম্বোডিয়ার আংশিক জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয় ইউরোপীয় কমিশন। তখন করোনা মহামারির প্রথম ঢেউ চলছিল। সব মিলিয়ে তখন কম্বোডিয়ার রপ্তানি কমে যায়।

ইউরোপীয় কমিশনের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি বিষয়ে মূল উদ্বেগগুলো হচ্ছে—ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন, ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধি নির্বাচন এবং অবাধে ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রম চালানোর অধিকারের আইনি বাধা; ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য ন্যূনতম সদস্যের প্রয়োজনীয়তা এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) ট্রেড ইউনিয়নের অনুপস্থিতি। মূল্যায়নে এসব বাধা দূর করার তাগিদ দেওয়া হয়। পাশাপাশি কারখানা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার ঘাটতি সমাধানের কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে সহিংসতা, হয়রানি, বরখাস্ত, অপর্যাপ্ত তদন্ত, মামলা ও কর্মীদের গ্রেপ্তারের মতো ইউনিয়নবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রম পরিদর্শনে সক্ষমতা ও সামর্থ্যের ঘাটতি দূর করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। শিশু ও জোরপূর্বক শ্রমের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ইউরোপীয় কমিশনের এ প্রতিবেদনে।

জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (ন্যাপ) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) রূপকল্পে অন্তর্ভুক্ত শ্রম অধিকারসংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে গতি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ইইউ। বাংলাদেশের শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ইইউর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রম অধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে ২০২১-২৬ সাল মেয়াদি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে। বর্তমানে সে অনুযায়ী কাজ করছে বাংলাদেশ।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ইপিজেড শ্রমবিধি এবং শ্রম আইন ও ইপিজেড শ্রম আইনের উপবিধি সংশোধন হলেও আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডে পৌঁছাতে এখনো ঘাটতি রয়ে গেছে।

সরকার ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ শ্রম পরিদর্শক পদে অতিরিক্ত ৯৪২ জনবল নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে শ্রম পরিদর্শকের পদসংখ্যা ২০০। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই আবার ফাঁকা রয়েছে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.