ঘরের কাজ, অফিসের কাজ ঠিক সময় মতো করতে গিয়ে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার সময়ই হচ্ছে না! রাতে ঘুমও হচ্ছে না ঠিকঠাক। ফলে পরের দিন সকালে এক রাশ ক্লান্তি নিয়ে চোখ খোলা। কাজে মনোযোগ না দিতে পারা। কর্মব্যস্ত জীবনে মানসিক চাপে ভোগেন কমবেশি সকলেই। এই সমস্যা থেকে মুক্তির পথ খুঁজছেন সবাই।
বন্ধু হোক বা প্রিয় জন, পরস্পরের প্রতি স্নেহ ও ভালবাসা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হল আলিঙ্গন। আচ্ছা ভাবুন তো যদি এমন কেউ থাকত যাঁকে আলিঙ্গন করা মাত্রই সমস্ত ক্লান্তি, দুশ্চন্তা নিমেষেই গায়েব হত। ভাবছেন বুঝি হেঁয়ালি করছি। আজ্ঞে না!এমন অনেকেই আছেন যাঁদের আলিঙ্গন করাই পেশা।
‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ ছবিতে সঞ্জয় দত্তের একটা সংলাপ ছিল না, ‘জাদু কি ঝপ্পি’— ব্যপারটা খানিকটা সে রকমই। এই পেশার সঙ্গে কিন্তু যৌনতার কোনও সম্পর্ক নেই। যাঁরা এই কাজ করেন তাঁদের বলা হয় ‘প্রফেশনাল কাডলার’।
আলিঙ্গনের মাধ্যমে মানসিক ক্লান্তি দূর করা এক দারুণ থেরাপিতে পরিণত হয়েছে। এই থেরাপির চাহিদাও বেশ বেড়েছে। যাঁরা নানা কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছেন তাঁরা চিকিৎসার জন্য প্রফেশনাল কাডলিস্টদের কাছে যেতে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন।
ট্রেভর হুটন হলেন একজন পেশাদার আলিঙ্গনকারী। কেবলমাত্র আলিঙ্গন করেই করে তিনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন। তবে তাঁর অলিঙ্গনে থাকে না যৌনতার কোনও ছোঁয়া। দীর্ঘ ক্ষণ আলিঙ্গন ও সুড়সুড়ির মাধ্যমেই তিনি রোগীদের মানসিক স্বস্তি দেন।
ঘন্টা খানেক আলিঙ্গনের জন্য তিনি রোগীদের কাছ ছেকে ৭৫ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৭,১০০ টাকা) নেন। শুধু তা-ই নয়, হুটন একজন কাউন্সিলারও বটে। যাঁরা নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপড়েনে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত তাঁদেরও মুশকিল আসান করেন হুটন।
কানাডাবাসী হুটনের মতে, ‘‘অনেকেই আমার কাজটা আদতে কী সেটা বুঝতেই পারেন না। তাঁরা ভাবেন আমি লোকেদের যৌন পরিষেবা দিয়ে থাকি। কিন্তু ব্যপারটা একেবারেই তা নয়। মানুষের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করা আমার নেশা আর সেটাকেই আমি পেশায় পরিণত করেছি। বহু মানুষ আমার আলিঙ্গনে স্বস্তিবোধ করেন। এটাই আমার কাছে বড় ব্যাপার।’’