নতুন করে আর একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নানা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সে দেশের সেনাবাহিনীর নানামুখী সংঘাত-সংঘর্ষ হচ্ছে। খবর আছে- চলমান সংঘাতের মধ্যে কিছু রোহিঙ্গা গোপনে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে আছে।
কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আর একজন রোহিঙ্গাকেও ঢুকতে দেওয়া হবে না। বর্ডারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও যথেষ্ট মনোবল নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। তিনি জানান, মিয়ানমারকে কড়া জবাব দিয়েছে বিজিবি। তবে মিয়ানমারের ঘটনায় শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বাংলাদেশ।
গেলো এক মাসে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে চারবার তলব করেছে ঢাকা। তাকে ডেকে বাংলাদেশ জানতে চেয়েছে সীমান্ত এলাকায় গোলাবর্ষণ মিয়ানমার ইচ্ছাকৃতভাবে করেছে, নাকি দুর্ঘটনা?
রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলবে হাজির হন।
এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক নাজমুল হুদার সাথে আধা ঘণ্টা বৈঠক করেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত।
এই বৈঠক থেকে বেরিয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যমের সামনে কোন কথাই বলেননি। তবে বৈঠকে ঢাকাকে জানিয়েছেন, সীমান্তে গোলাবর্ষণের হতাহতের ঘটনা দুর্ঘটনা মাত্র।
এদিকে, সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে করনীয় ঠিক করতে বৈঠক করে স্বরাষ্ট্র-পররাষ্ট্রসহ সরকারের সব গোয়েন্দা এজেন্সি এবং বিজিবি প্রতিনিধি।
দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সীমানায় মিয়ানমারের হামলার বিষয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে ঢাকা। আর এ বিষয়ে জাতিসংঘে অভিযোগ জানানোর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।
তবে মিয়ানমার থেকে আর একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সে দেশের সেনাবাহিনীর তীব্র সংঘর্ষের সময় গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টার শেল এবং হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিও এসে পড়ছে। প্রথম দিককার ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে গত শুক্রবার রাতে মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখায় পড়ে এক রোহিঙ্গা কিশোর মারা যায় এবং কয়েকজন আহত হয়।
এর পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। সংশ্লিষ্ট এলাকার এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্র বন্ধ করে কক্সবাজার এনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করছে স্থানীয় প্রশাসন। এ নিয়ে ওই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।