জীবনের ৬০ বসন্ত কাটিয়ে দিলেন নারীবাদী লেখক তসলিমা নাসরিন। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিষয়ে ফেসবুকে তার স্ট্যাটাস থাকলেও এমন একটি দিনে তিনি নিজেকে নিয়ে কোনো কিছুই লেখেননি। এমন বিশেষ দিনে নির্বাসিত এই লেখককে সোশ্যাল সাইটের মাধ্যমে শুভেচ্ছা-ভালোবাসায় সিক্ত করেছেন ভক্তরা। ভেরিফায়েড পেজে নিজের কোনো স্ট্যাটাস না থাকলেও তাকে নিয়ে লেখা অন্যের স্ট্যাটাসগুলো শেয়ার করতে ভুল করেননি তিনি।
বয়সকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে এখনও প্রেম আসে তসলিমার জীবনে। দুঃসাহসী এই লেখিকা বলেছেন, ‘আমি তো ঘন ঘন প্রেমে পড়ি। তবে ভুল মানুষের। কিছুদিন পর বুঝতে পারি নির্বাচন ভুল হয়েছে। আসলে ভালো লাগলে অনেক কিছু আবার প্রথম দিকে চোখেও পড়ে না। ধীরে ধীরে বুঝি। তাই বলে হৃদয়ের দরজা বন্ধ করি না। ‘ ঘন ঘন প্রেমে পড়লেও একা থাকতে ভালোবাসেন তসলিমা। একা গিয়ে রেস্টুরেন্টে খেয়ে আসেন। তার এই নিঃসঙ্গ সময়ের সঙ্গী ১৯ বছর বয়সী পোষা বিড়াল মিনু।
লেখালেখির কারণে নব্বইয়ের দশকে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে দেশত্যাগে বাধ্য হন তিনি। ৬০তম জন্মদিনে তিনি ভারতে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। সোশ্যাল সাইটের মাধ্যমে ভক্তরা তাকে বাংলাদেশে ফিরতে দেওয়ার দাবি তুলেছেন জোড়ালোভাবে।
কিন্তু উগ্রবাদীরা যেভাবে তার পেছনে পড়ে আছে, তাতে বাংলাদেশে ফেরা কী আর হবে? নিদেনপক্ষে কলকাতায়? সেখানেও তো রাজনৈতিক কারণে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। তসলিমা জানান, কোনোদিন যদি নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় তাহলে সবার আগে কলকাতায় যাবেন। কারণ বাংলাদেশ তার জন্য এখনও নিরাপদ নয়। তবে তসলিমা জানেন, এ জীবনে হয়তো তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠবে না। রাজনীতিতে যোগদান নিয়েও আগ্রহ নেই তসলিমার। তিনি থাকতে চান লেখালেখি নিয়ে।
গত ১৬ আগস্ট সর্বশেষ প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন স্পষ্টবাদী এই লেখিকা। এই নিয়ে কয়বার হলো? তসলিমা জানান, কোনো হিসেব নেই। বাংলাদেশে থাকাকালীন তিন-চার বার পেয়েছিলেন। ভারতে এই নিয়ে বোধহয় পাঁচ বার। তবে এবারের হুমকি নাকি পাকিস্তান থেকে এসেছে। গত ৩০ বছর ধরে তিনি প্রাণনাশের হুমকি মাথায় নিয়েই জীবন যাপন করছেন। এখন এসব নিয়ে আর মাথা ঘামান না তসলিমা। তবে অবশ্যই সতর্ক থাকেন।