আমাদের সমাবেশে বিএনপি গ্রেনেড-বোমা মেরেছে, আর আমরা তাদের সমাবেশে নিরাপত্তা দেই : তথ্যমন্ত্রী  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমরা বিএনপিকে তাঁদের জনসভায় নিরাপত্তা দিয়েছি, আর তাঁরা আমাদের ওপর বোমা হামলা চালিয়েছে, গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। এটিই হচ্ছে তাঁদের সাথে আমাদের পার্থক্য।’

শুক্রবার সকালে আগামী ২৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী সফর প্রস্তুতি উপলক্ষে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় ও মাঠ পরিদর্শন শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, ‘আমরা জনগণের শক্তিতে বলীয়ান। আর তারা ষড়যন্ত্র আর অস্ত্রের শক্তিতে বিশ্বাস করে। সুতরাং জনতার শক্তিতে যেন সমস্ত অপশক্তি দূরীভূত হয়, সেটিই ২৯ তারিখে রাজশাহীর জনসভায় দেখিয়ে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি সারাদেশে বিভিন্নভাবে জনসভা করেছে। আমরা সহায়তা করেছি। আমরা সহায়তা না করলে তাঁরা নির্বিঘ্নে এই জনসভা করতে পারত না।’

‘আর আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, তাঁরা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আমাদের জনসভায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত, চারশ’ জনের বেশি আহত হয়েছে, শেখ হাসিনা ও আমাদের বিভিন্ন জনসভায় বোমা হামলা হয়েছে। শেখ হেলালের জনসভায় হামলা করে এক ডজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, কিবরিয়া সাহেব, আহসান উল্লাহ মাস্টারের জনসভায় হামলা করে তাঁদেরকে হত্যা করা হয়েছে, সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের জনসভায় হামলা হয়েছে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রাসেল স্কয়ারে চল্লিশ-পঞ্চাশ জন জমা হলেই লাঠিপেটা করা হয়েছে। জাতীয় সংসদের নবনির্বাচিত উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, তৎকালীন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকেও লাঠিপেটা করা হয়েছে। কই, তাঁদের কোনো নেতার গায়ে কোনো আঁচড় পড়েছে! পড়ে নাই। এটিই হচ্ছে তাঁদের সাথে আমাদের পার্থক্য।’

তথ্যমন্ত্রী এর আগে রাজশাহী সার্কিট হাউজে  সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। আগামী ১৬ জানুয়ারি বিএনপির দেশব্যাপী বিক্ষোভ নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিএনপির সামনের কর্মসূচিও গত ১৪ বছর ধরে তাঁরা যে নানা ধরণের আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে তারই ধারাবাহিকতা ছাড়া আর কিছু হবে না। কয়েকদিন আগে বিএনপি যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করল বা আগামী ১৬ তারিখে যে মিছিল, সেগুলো একটা ডিম পাড়ার আগে হাঁস যেমন অনেক হাঁকডাক দেয়, সেটি ছাড়া আর কিছু না।’

বিদ্যুতের মূল্যের কয়েক দফা বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের বিদ্যুৎখাত এখনো জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর। কন্টিনেন্টাল ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের রেশনিং করা হচ্ছে, দাম বাড়ানো হচ্ছে। আমাদের দেশে কিন্তু সেইভাবে দাম বাড়ানো হয়নি।’

আওয়ামী লীগের রাজশাহী মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রধান অতিথি হিসেবে ও অন্যান্যের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক এস এস কামাল হোসেন, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক টুকু, রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ যোগ দেন।