সাকিবকে ছাড়া এক বছর চলতে হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে। জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় সাকিবকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। এর মধ্যে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। এই দুঃসংবাদ মাথায় নিয়েই ভারতের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে প্রতিবেশী দেশে গিয়েছে বাংলাদেশ। কাল থেকে শুরু হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
রোববার সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মুখোমুখি হবে দু’দল। ওই ম্যাচের পরে বিশ্লেষণ হবে সাকিব ছাড়া মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বে দল কেমন খেলেছে। বাংলাদেশ দলের টি-২০ অধিনায়ক তাই সাকিবে নয় চোখ রাখছেন ম্যাচের দিকে।
সাকিব ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে মাত্র আটবার। এর মধ্যে আবার সাকিব খেলতে পেরেছেন ছয় ম্যাচ। এই ছয় ম্যাচে সাকিবের ব্যাট হাসেনি একদম।
দুই দলের মধ্যে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বল হাতে চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে শুধু রোহিত শর্মার উইকেটটা তুলে নিয়ে পেরেছিলেন সাকিব। ট্রেন্ট ব্রিজের সে ম্যাচে প্রজ্ঞান ওঝার স্পিনে ঘায়েল হওয়ার আগে ১০ বল খেলে মাত্র ৮ রান করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বোল্ড হয়েছিলেন ভুবনেশ্বর কুমারের বলে। দুই বল খেলে করেছিলেন মাত্র এক রান। বল হাতে চার ওভারে ২৬ রান নিয়ে একজনকেও আউট করতে পারেননি সে দিন।
২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে তিন বার ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। দুই বার গ্রুপ পর্বে, এক বার ফাইনালে। আঙুলের চোটের কারণে প্রথম দুই ম্যাচে খেলেননি সাকিব। চোট সারিয়ে ফাইনালে ফেরেন তিনি। তাতেও লাভ হয়নি কোনো। ফাইনালে রান আউট হওয়ার আগে সাত বলে সাত রান তোলেন। বোলিংয়ে চার ওভারে ২৮ রান দিয়ে শুধু শিখর ধাওয়ানকে আউট করেন তিনি।
সাকিব না জ্বলে উঠলে বাংলাদেশ যে জ্বলে ওঠে না, ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলোই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ যেন। ভারতের বিপক্ষে এ কারণেই বোধ হয় সব কয়টা টি-টোয়েন্টিতে হেরেছে বাংলাদেশ!
তবে এসব নিয়ে মোটেও ভাবছেন না মাহমুদুল্লাহ। তিনি চান সাকিবের মতো নেতৃত্ব দিতে এবং মাশরাফির মতো দলকে সাহস দিতে। অধিনায়ক মাশরাফি এবং সাকিবের থেকে মাহমুদুল্লাহ যা শিখেছেন কা কাজে লাগাতে চান।
মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা সবাই জানি যে, বাংলাদেশের একজন বড় পারফরমার সাকিব। সে একটা ভুল করেছে। কোন অন্যায় করেনি। আমাদের চোখ সামনের ম্যাচের দিকে। তরুণদের জন্য এগিয়ে আসার, দায়িত্ব নেওয়ার এবং দক্ষতা প্রমাণের এটা একটা বড় সুযোগ। তবে সাকিবের জায়গা পূরণ করা খুবই কঠিন। তার মতো ক্রিকেটার এক দিনে তৈরি হয় না।’
ভারত সিরিজে সাকিবের বদলে টি-২০ দলের নেতৃত্ব পাওয়া মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা এক সঙ্গে অনেক বছর খেলেছি। সাকিব দারুণ এক নেতা। অন্যদিকে মাশরাফি প্রেরণাদায়ী এক অধিনায়ক। আমিও চেষ্টা করবো নিজের জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে এবং ভালো নেতা হতে। দলকে পরিচালনা করার খুবই ভালো এক সুযোগ এটা আমার জন্য। আমরা দল হিসেবে ভালো খেলার এং আমাদের দক্ষতা প্রমাণের চেষ্টা করবো।’
ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-২০ নিয়ে মাহমুদুল্লাহ জানান, তাদের লক্ষ্য বড় রান করা এবং ভারতকে চাপে রাখা। এছাড়া দিল্লির দূষণ নিয়ে বাংলাদেশ এই অধিনায়কের মন্তব্য, এ নিয়ে তিনি বেশি চিন্তিত নয়। কারণ কন্ডিশনের ব্যাপারটা তাদের হাতে নেই। তারা তাই এই প্রতিকুলতা পাড়ি দিয়ে ভালো খেলার দিকে মন দিচ্ছেন।