মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভরা মৌসুম এখন। তারপরও দাম বাড়ছে মসলাজাতীয় পণ্যটির। গত দু’দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। এতে আগাম বা মুড়িকাটা জাতের নতুন পেঁয়াজের কেজি আবারও শতক ছুঁয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, মুড়িকাটা পেঁয়াজ প্রায় শেষের দিকে। তা ছাড়া বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ নেই। সে জন্য দর বাড়ছে। তবে মাসখানেকের মধ্যে নতুন হালি পেঁয়াজ ওঠা শুরু হবে। তখন আবার দর কমে যাবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুড়িকাটা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। অথচ দু’দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকার আশপাশে।
কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকরা ক্ষেত থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজের বড় অংশই তুলে ফেলেছেন। তা ছাড়া বাজারে এ সময় আমদানি করা পেয়াঁজও থাকে। বিশেষ করে ভারত, মিয়ানমার ও তুরস্কের পেঁয়াজের সরবরাহ দেখা যেত। কিন্তু এখন ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ। অন্যদিকে ডলার সংকট থাকায় অন্য দেশ থেকেও আমদানি হচ্ছে না। সে জন্য বাজারে এখন বিদেশি পেঁয়াজের সরবরাহ নেই বললেই চলে। ফলে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে সবাইকে। এ অবস্থায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলা শেষ হয়ে যাওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। তবে বাজারে দু-একটি দোকানে আমদানি করা কিছু পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো কিনতে ক্রেতাকে কেজিতে খরচ করতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের বাজারদর অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এ দর ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। সংস্থাটির তথ্য বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ২৩ ও ২৬ শতাংশ।
খুচরা বাজারের পাশাপাশি উৎপাদন এলাকাতেও দর বেড়েছে। গতকাল পাবনার সুজানগরের কৃষক কামরুজ্জামান জানান, ক্ষেত থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলা শেষ। পাবনার বাজারে দর বাড়তি এখন। পাইকারিতে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৮ টাকা।
গত ডিসেম্বরের শুরুতে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর দেশের বাজারে পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। তখন মুড়িকাটা জাতের নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করে। শুরুর দিকে মুড়িকাটা পেঁয়াজের কেজি দেড়শ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছিল। তবে ধীরে ধীরে কমে সর্বশেষ গত সপ্তাহে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় নেমে আসে। এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে পণ্যটির দাম।