আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা আশিকুল ইসলাম বিটুর ক্লাসে ফেরার প্রতিবাদে বুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না আসায় ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের এই কর্মসূচি চলবে বলে জানান বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘নো ক্যাম্পাস শেয়ারিং উইথ অ্যা মার্ডারার’, ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এ বুয়েটে হবে না’, ‘আবরার ফাহাদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘বিটুর আজীবন বহিষ্কার নিশ্চিত করা হোক’, ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থী উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেছেন। আমাদের গণমাধ্যমেরে সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যা কিছু হবে সেটা সম্মিলিতভাবেই বলা হবে। আমাদের সিদ্ধান্ত রাতে (বুধবার) জানিয়ে দেওয়া হবে।’
এর আগে ২০২১ সালের ২২ মে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অনলাইন ক্লাসে যোগদান করেন আশিকুল ইসলাম বিটু। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তখনও ক্লাস বর্জনের মতো প্রতিবাদ কর্মসূচি দিলে তিনি আর ক্লাস করতে পারেননি।
এরপর সম্প্রতি আবারও আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম (বিটু) ক্লাসে ফিরে এসেছেন। গত ৬ আগস্ট কেমিক্যাল ১৯ ব্যাচের ক্লাসে তাকে ফের দেখা যায়। এ ঘটনায় বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা চরমভাবে ক্ষিপ্ত বলে জানা যায়।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে রাতভর পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর। দেশব্যাপী আলোচিত এ ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
এ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ দেখে ২৬ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করে বুয়েট প্রশাসন। তালিকার ১৭ নম্বরে ছিলেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬ ব্যাচের আশিকুল ইসলাম বিটু। তবে হত্যা মামলার চার্জশিটে আশিকুলের নাম বাদ দেয় পুলিশ। পরে বহিষ্কার আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন আশিকুল ইসলাম বিটু। বহিষ্কার স্থগিত হওয়ায় সম্প্রতি ক্লাসে ফেরেন তিনি। এতেই ক্ষুব্ধ হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।