কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে মামলার প্রধান আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ বাকি সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পাশাপাশি মুনিয়া কার দ্বারা অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন, সেটি নিশ্চিত হতে এতদিনেও প্রধান আসামি ভিকটিমের প্রেমিক আনভীরের ডিএনএ ম্যাচিং করা হয়নি। গুলশানের যে বাসায় মুনিয়া থাকতেন, সেই বাসা ও আশপাশের ভবনের সিসি ক্যামেরার পর্যাপ্ত ফুটেজও জব্দ করেনি পুলিশ।
বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে-৮ এ এসব অভিযোগ করেন বাদীপক্ষের আইনজীবীরা। বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের অগ্রগতিসহ এসব প্রশ্নের জবাব দিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আগামী ১০ অক্টোবর আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলব করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বর্তমানে বিদেশেও বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর মুনিয়া মামলার ৩ নম্বর আসামি আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সোবহানকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে উচ্চ আদালতের দেওয়া আগাম জামিনের বেইল বন্ড (জামিননামা) দাখিল করতে বলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার আইনজীবীর মাধ্যমে ওই জামিননামার কাগজ জমা দিতে গেলে ট্রাইব্যুনাল উক্ত আদেশ দেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে দুদিনের রিমান্ড শেষে আরেক আসামি কথিত মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসাকে গতকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালত বলেছেন, মুনিয়ার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ৪টি আঘাতের চিহ্ন থাকায় মূল আসামি আনভীরের বিষয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ আপাতত হস্তক্ষেপ করবে না।
ভিকটিম মুনিয়ার বড় বোন ও মামলার বাদী নুসরাত জাহান তানিয়ার অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন জানান, প্রধান আসামিকে উচ্চ আদালতও জামিন না দেওয়ায় তাকে গ্রেপ্তারে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কোনো আইনি বাধা নেই। এরপরও অনেক দিন পেরিয়ে গেলেও আনভীরসহ অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা নেই।
তাছাড়া মুনিয়া যে অন্তঃসত্তা ছিল, সেজন্য মূল অভিযুক্তের ডিএনএ টেস্ট করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডের আগে মুনিয়ার গুলশানের বাসায় কারা যাতায়াত করত, তা নিশ্চিত হতে ওই বাসাসহ চারপাশের ভবনের সিসি ক্যামেরায় ফুটেজ জব্দ করার কথা ছিল। তাছাড়া মামলার তদন্তেও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
এই আইনজীবী বলেন, “এসব অভিযোগের বিষয়ে গত বুধবার আমরা ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ লিখিত অভিযোগ করেছি। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শককে ১০ অক্টোবর আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ওই ট্র্যাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম মাফরোজা পারভীন।”