The news is by your side.

আইপিএলের বিতর্ক:  চড় থাপ্পড়, যৌন হেনস্থা থেকে ‘সাহসী’ চিয়ারলিডার!

0 112

২০০৮ সালে ভারতীয় ক্রিকেটে প্রথম বার চালু হয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। বিদেশি ক্রিকেটে আগে থেকেই এই ধরনের লিগ চালু ছিল। ভারতে শুরুতেই আইপিএল তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।

বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে একই দলে মিলেমিশে ভারতীয়দের খেলা আইপিএলের মঞ্চকে প্রথম থেকেই আকর্ষণীয় করে তুলেছিল। সময় যত এগিয়েছে, আইপিএলের জনপ্রিয়তা ততই বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে ডালপালা মেলেছে হাজারো বিতর্ক।

২০০৮-এর প্রথম মরসুমেই আইপিএলে বিতর্ক শুরু হয় হরভজন সিংহের হাত ধরে। মাঠে বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়ের গালে থাপ্পড় মেরে বসেন তিনি। যার জন্য কড়া শাস্তি পেতে হয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের তৎকালীন অধিনায়ক ভাজ্জিকে।

মুম্বইয়ের সঙ্গে পঞ্জাবের খেলার শেষে শ্রীসন্থকে থাপ্পড় মেরেছিলেন হরভজন। তাঁকে ওই মরসুমের বাকি ম্যাচগুলি থেকে বহিষ্কৃত করা হয়। সেই সঙ্গে প্রাপ্য বেতনের ১০০ শতাংশ জরিমানা করা হয়।

আইপিএলের প্রথম মরসুমে ভারতে এসে বিভিন্ন দলের জার্সি গায়ে খেলেছিলেন পাকিস্তানের খেলোয়াড়েরা। শাহিদ আফ্রিদি থেকে শুরু করে শোয়েব মালিক, শোয়েব আখতার, মিসবা উল হকদের আইপিএল খেলা সেই প্রথম এবং সেই শেষ।

২০০৮ সালে মুম্বই হামলার পর ভারতে এসে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের আইপিএল খেলা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে ভারত সরকার এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই কড়া অবস্থান নিয়েছিল। যা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি।

আইপিএলের অন্যতম আয়োজক ছিলেন ললিত মোদী। বিসিসিআইয়ের সঙ্গে আইপিএল চালুতে তাঁরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কিন্তু লিগের তৃতীয় মরসুমেই আইপিএলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ললিতকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটা, আর্থিক তছরুপ-সহ নানা অভিযোগ ছিল।

২০১১ সালের আইপিএলে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রথম তিন মরসুমে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনিই। কিন্তু দল ভাল খেলতে না পারায় পরবর্তী নিলামে সৌরভকে কেনেননি কেকেআর কর্তৃপক্ষ।

কলকাতার ঘরের ছেলে সৌরভকে ছাড়া কলকাতার দল তৈরি করায় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন সমর্থকদের একাংশ। শহর জুড়ে স্লোগান ওঠে ‘নো দাদা, নো কেকেআর’। সেই বিতর্কের পর থেকে আইপিএলে কলকাতার সমর্থকদের একটা বড় অংশ পাকাপাকি ভাবে কেকেআর বিমুখ হয়ে যান।

শুধু খেলোয়াড় নন, আইপিএলের মঞ্চে বিতর্ক ডেকে এনেছেন চিয়ারলিডারেরাও। ২০১১ সালের আইপিএলে ২২ বছর বয়সি দক্ষিণ আফ্রিকান চিয়ারলিডার গ্যাব্রিয়েলা পাসকুয়ালোতো খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করে শিরোনামে উঠে আসেন।

গ্যাব্রিয়েলার অভিযোগ ছিল, আইপিএলের ক্রিকেটারেরা চিয়ারলিডারদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন। সুযোগ পেলেই চিয়ারলিডারদের যৌন হেনস্থা করা হয়। তাঁদের সাহসী পোশাকের সুযোগ নেন ক্রিকেটারেরা। এই অভিযোগের পর তুমুল বিতর্ক হয়। গ্যাব্রিয়েলাকে আইপিএল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

২০১২ সালে যৌন হেনস্থার অভিযোগে মুম্বই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার লিউক পমার্সব্যাচ। এক মহিলা জানান, লিউক তাঁকে মদ্যপানের প্রস্তাব দেন। তা নাকচ করলে মহিলার পিছু নিয়ে একটি ঘরে গিয়ে তাঁকে হেনস্থা করা হয়।

লিউক রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দলের খেলোয়াড় ছিলেন। এই বিতর্কের পর দলের মালিক বিজয় মাল্য একটি বিবৃতি দিয়ে জানান, অভিযুক্ত ক্রিকেটারের সঙ্গে আর তাঁদের দলের সম্পর্ক নেই। এর পর ভারত ছাড়তে বাধ্য হন লিউক।

মু্ম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের বিতর্ক আইপিএলের ইতিহাসে স্মরণীয়। অভিযোগ, স্টেডিয়ামের নিয়ম ভেঙে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন শাহরুখ। তিনি মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। যদিও শাহরুখ নিজে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

২০১২ সালের আইপিএলে এই বিতর্কের পর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে শাহরুখকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য স্টেডিয়ামে নিষিদ্ধ করে দেন।

আইপিএলের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বড় বিতর্কের কালি লেপে দিয়েছিল ২০১৩ সাল। ম্যাচ গড়াপেটায় নাম জড়ায় তিন ক্রিকেটারের। তাঁরা হলেন শ্রীসন্থ, অঙ্কিত চৌহান এবং অজিত চান্ডিল্য। তদন্তে উঠে আসে আরও বড় বড় নাম।

রাজস্থান রয়্যাল্‌সের মালিক শিল্পা শেট্টি এবং রাজ কুন্দ্রা এবং চেন্নাই সুপার কিংসের মালিক তথা বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসনের জামাই গুরুনাথ মইয়াপ্পানের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ ওঠে। শ্রীনিবাসন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। চেন্নাই এবং রাজস্থানকে দু’বছরের জন্য আইপিএল থেকেই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।

আইপিএলে পঞ্জাবের দলটি যৌথ ভাবে কিনেছিলেন বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জ়িন্টা এবং তাঁর তৎকালীন প্রেমিক নেস ওয়াদিয়া। ২০১৪ সালে পঞ্জাবর স্টেডিয়ামে একটি ম্যাচ চলাকালীন প্রীতি প্রেমিকের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ তোলেন। পরে তাঁদের সম্পর্কটিও ভেঙে যায়।

২০১৫ সালে আইপিএলের একটি ম্যাচ চলাকালীন বিতর্কে জড়ান বিরাট কোহলি এবং অনুষ্কা শর্মা। ম্যাচের মাঝে খেলোয়াড়ের পরিবার বা অন্য কোনও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখা করার নিয়ম নেই। কিন্তু অভিযোগ, বৃষ্টিবিঘ্নিত একটি ম্যাচে বিরাট নিয়ম ভেঙে অনুষ্কার সঙ্গে দেখা করেন। ক্যামেরাতেও তা ধরা পড়ে। এ নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.